চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ইমরানের জয়ে উপমহাদেশে নতুন করে জঙ্গিবসন্তের শঙ্কা

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি ঘোলাটে মনে হলেও বলা যেতে পারে যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মদদে ভোটে জিতে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

২৭২টি জাতীয় আইনসভা এবং ছটি প্রাদেশিক আইনসভায় ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) অনেকটাই এগিয়ে। নওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) ও নিহত বেনজির ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ছাড়াও আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) মতো অন্য দলগুলো নানা অভিযোগ এনেছে।

নির্বাচনে ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সরাসরি সমর্থন পেয়েছে বলে যে খবর, তা ওপেন সিক্রেট। এসব কারণে প্রথাগত ক্ষোভ-বিক্ষোভ করেই প্রতিবাদ করছে ইমরানের দল ছাড়া প্রায় সবাই।

দুনিয়াজুড়ে ইমরান খানের পরিচিতি বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়ক কাম একজন ‘সেলিব্রেটি প্লেবয়’ হিসেবে। সেই ইমরান খানই রাজনীতির ধারায় হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের ধর্মীয় রক্ষণশীল ঘরানার এক জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। ১৯৯৬ সালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতির বিশৃঙ্খল মাঠে পা রাখেন ইমরান খান। এরপর থেকে ব্যক্তিগত বিভিন্ন ইস্যু আর জাতীয় ইস্যুতে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতে পাকিস্তান অনেক কারণেই আলোচিত, বর্তমানে পাকিস্তানের রাজনীতিতে জঙ্গিবাদের পুনর্বাসনও বেশ চোখে পড়ার মতো। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ সাঈদকে ভোটে দাঁড়ানোর ছাড়পত্র দিয়েছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। সাঈদ মুম্বাই হামলায় মোস্ট ওয়ান্টেড আসামী। নির্বাচনে তারা কোনো আসন না পেলেও খোলাখুলি রাজনীতির সুযোগ নানা শঙ্কা তৈরি করেছে। এছাড়া ইমরানের তালেবানপ্রীতি সবার জানা। বেশি সমালোচনার শিকার হয়েছেন সামি উল হকের সঙ্গে নির্বাচনী জোট বেঁধে। সামি উল হক ‘তালেবানদের পিতা’ নামে পরিচিত। এছাড়া নির্বাচনের আগে পিটিআইকে আল-কায়েদা ঘনিষ্ঠ জঙ্গিদল হরকত-উল-মুজাহিদীনের সমর্থন করেছে। এসব নানা ঘটনা প্রতিবেশী দেশ ভারত, আফগানিস্তানসহ বাংলাদেশের জন্য চিন্তার কারণ বলে অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক মত প্রকাশ করেছেন।

নির্বাচনের দিন ইসলামাবাদ, লাহোর, করাচি, পেশোয়ার, কোয়েটাসহ দেশটির সর্বত্র জারি হয় কড়া সতর্কতা। বোমা হামলাসহ নানা সহিংসতায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে অনেক দূরে, তাছাড়া সরাসরি কোনো সীমানাও নেই। এরপরও পাকিস্তানে কোনো ধরণের জঙ্গিবসন্তের মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে বৈশ্বিক জঙ্গিবাদের ভাইরাস সংক্রমিত হতে বেশি সময় লাগবে না বলে আমাদের শঙ্কা। বিষয়গুলোর প্রতি দেশের বিভিন্ন মহলকে সতর্ক থাকাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলেও আমরা মনে করি।