রমজান মাসে রোজা যেহেতু ফরজ ইবাদত, সুতরাং মুসলিম দেশগুলোতে রমজান মাস এলে মোটামুটি সবাই রোজা রাখেন এবং নিজেদের দৈনন্দিন কার্যাবলীর সময়সূচির মধ্যেও পরিবর্তন নিয়ে আসে। রমজান এলে দুপুরের পর থেকেই ইফতারের জন্য বিভিন্ন প্রকার খাবার আয়োজনের ব্যস্ততা শুরু হয়।
বিশেষ করে বাসাবাড়ীতে নানা রকম সুস্বাদু ও মুখরোচক খাবারের আইটেম তৈরী করার প্রবণতা দেখা যায়। মানুষের এই প্রবণতাকে কেন্দ্র করে, হরেক রকম ইফতারির পসরা সাজিয়ে দোকানীরা রাস্তার ধারে, ফুটপাতে, অলিতে-গলিতে বসে যায়। যাদের পক্ষে বাসায় ইফতারি বানানো সম্ভব হয় না তারা এসব দোকান থেকেই ইফতার কিনে খেয়ে থাকেন। আবার অনেকে খাবারে ভিন্নতা আনার জন্যও বাসায় এসব খাবার কিনে নিয়ে যায়।
তবে ব্যাপার হলো, এ সমস্ত মুখরোচক খাবার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে কিনা তা জানার? আমাদের দেশের অধিকাংশ জায়গায় এসব মুখরোচক ভাজা খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ভেজাল তেল, ভেশন ও কৃত্রিম রঙ। এক্ষেত্রে আমাদের উচিত বাহিরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা এবং ঘরে তৈরি খাবার খাওয়া।
রোজায় ইফতারিতে যা খাবেন:
ইফতারিতে চাই হাইজেনিক খাবার, যা হবে পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত। সারাদিনের খাবারের ঘাটতি পূরণে তরল জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে শরবত বেশি করে পান করা উচিত। এবং ইফতারিতে যতটা সম্ভব তৈলাক্ত খাবার বাদ দেয়া উচিত। বেশি করে ফল-মূল খাওয়া উচিত। ফলের উপকারিতা হচ্ছে পানিশূন্যতা দূর করে দ্রুত শরীরকে সতেজ করে। আর যেহেতু এখন গ্রীষ্মকাল সুতরাং সারাদিনে শরীরে পানির যে ঘাটতি দেখা দিবে তা পূরণ করতে প্রচুর ফল ও পানি পান করতে হবে। রোজার সময় ডাবের পানিও উপকারী বটে। খেজুর তো থাকবেই সাথে আম, আনারস ইত্যাদি মৌসুমী ফল হলেও মন্দ হয় না। দই, চিড়া খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সহজে হজম হয় এমন নরম খাবার গ্রহণ ইফতারির জন্য উপকারী।
সেক্ষেত্রে চিড়া ভিজিয়ে কলা এবং অল্প মিষ্টি দিয়ে খেতে পারেন। সাথে দই খেতে পারলে পেট ঠান্ডা থাকবে। কাঁচা ছোলা খাওয়া হজমের জন্য বা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। সারাদিনের ভেজানো ছোলা খোসা ছাড়িয়ে বাটিতে অল্প পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ আর লেবু মিশিয়ে খেলে ইফতারিতে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া ইফতারিতে বাইরের খাবার পরিহার করার চেষ্টা করা ভালো। একটানা একমাস রমজান বিধায় মাঝে মাঝে ইফতারিতে বৈচিত্র্য আনতে পারেন, তবে সব কিছুই হওয়া চাই ঘরোয়া রান্না।
বাসায় তৈরি পরিমাণমত বিশুদ্ধ তেলে ভাজা পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনী, জিলেপী এবং বুট ও মুড়ি রাখা যেতে পারে। অনেকে খাবারের আইটেমে ভিন্নতা আনতে নুডুলস, সেমাই, ভূনা তেহারী, হালিম ইত্যাদি রাখেন। এ খাবারগুলো দোকান থেকে কেনার চেয়ে বাসায় তৈরি করে নেয়া উচিত। রোজার খাবার যত সাধারণ হবে ততই ভালো। এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
রমজানে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খান। এবং রমজান মাস জুড়ে সুস্থ শরীরে রোজা রাখুন।
ছবি: সংগৃহিত