২৭ কোটি জনসংখ্যার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া, করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন এই হটস্পটে মৃত্যু আর আক্রান্তের মিছিল চলছে। বর্তমানে করোনায় বিপর্যস্ত ভারতের থেকেও দৈনিক হিসেবে সেখানে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
জনসংখ্যা বিচারে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দেশ ইন্দোনেশিয়ায় গত একদিনে রেকর্ড দুই হাজার ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্ত হয়েছে ৩২ হাজারের বেশি। দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬১৯ জনের। মোট শনাক্ত ৩৭ লাখ ১৮ হাজার ৮২১ ছাড়িয়েছে। বিশ্বের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, ইন্দোনেশিয়ায় মহামারির বর্তমান গতি ও আক্রান্তের হার নতুন কোভিড ধরনের উৎপত্তির ঝুঁকিতে রয়েছে দেশটি, যা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে।
গত বছর করোনার প্রকোপ শুরু হবার পর থেকে সেদেশে করোনা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এ বছর মে মাসের শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ করেই মারাত্মক আকার ধারণ করে। ঈদের ছুটিতে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে যাতায়াত করায় এই পরিস্থিতি বলে সেদেশের গণমাধ্যম জানাচ্ছে।
ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রকোপ শুরু হবার পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু করেছে বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি। যেসব দেশে করোনা প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল, সেসব দেশে আবারও আক্রান্ত বাড়ছে রেকর্ড হারে। আমাদের দেশেও হঠাৎই বেড়ে গেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। বিষয়টি আমাদের খুবই ভাবাচ্ছে।
গতকাল (১১ আগস্ট) থেকে দেশজুড়ে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। পর্যটন ও শিক্ষা খাত ছাড়া সবকিছু খুলে দেয়া হলে দেশজুড়ে জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করে। পরে আজ (১২ আগস্ট) পর্যটন খাতকেও খুলে দেবার ঘোষণা আসে। সবকিছুতে স্বাস্থ্যবিধি মানার একটি শক্ত বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাস্তবচিত্র পুরো ভিন্ন!
করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার দৃষ্টান্তমূলক কর্মসূচি চালাচ্ছে দেশজুড়ে। তারপরেও বিরাট সংখ্যক জনগণ এখনও ভ্যাকসিন কর্মসূচির বাইরে। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশের হঠাৎ বদলে যাওয়া পরিস্থিতি দেখে আমাদের সাবধান হতে হবে। সরকারের পাশাপাশি জনগণকে নিজেদের প্রাণের তাগিদে সাবধান ও সচেতন হয়ে করোনা মোকাবিলা করতে হবে, না হলে যেকোনো সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আমাদের আশাবাদ, সবাই এ বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগী হবেন।