‘ইতিহাস নির্ভর নাট্য নির্মাণ চিরকালই কঠিন কাজ। আর একজন মহাপুরুষের সংগ্রামী জীবন নিয়ে শিল্প নির্মাণ আরও কঠিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন, রাজনৈতিক দর্শন, স্বপ্ন ও সংগ্রাম, তাঁর বিভিন্ন সময়ের বক্তৃতার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। কর্মের ভেতর দিয়ে তার দেশপ্রেম, একটি জাতির মুক্তির পথ নির্মাণ এবং বাংলা নামে দেশ স্থাপন সংগীত, কোরিওগ্রাফি ও কবিতার মধ্য দিয়ে উপস্থাপিত হয়েছে। একটি আবেগ আশ্রিত কাব্যিক শিল্প উপস্থাপন ‘মুজিব মানে মুক্তি।’
-‘মুজিব মানে মুক্তি’ নাটকটি নিয়ে বলছিলেন নাট্য নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকী।
‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮’ এর ৮ম দিনে ১৪ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘নাটকে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে লোকনাট্যদল সিদ্ধেশ্বরী পরিবেশিত নাটক ‘মুজিব মানে মুক্তি’ পরিবেশিত হয়। নাটকটির নাট্যায়ন ও নির্দেশনা করেছেন লিয়াকত আলী লাকী।
বঙ্গবন্ধুর মহান সংগ্রামী জীবন-ভিত্তিক ঐতিহাসিক নাট্যাখ্যান ‘মুজিব মানে মুক্তি’। আবহমান বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস, সংস্কৃতি, শোষণ-বঞ্চনা, দ্রোহ ও মুক্তির স্বপ্ন বিনির্মাণ এই নাটকের মূল উপপাদ্য। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, তেইশ বছরের পাকিস্তানি অপশাসন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরে দেশ গঠন এবং তার মহাপ্রয়াণ এই নাটকের উপাত্ত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, সংগ্রাম ও মহাপ্রয়াণ ভিত্তিক রাজনৈতিক আলেখ্য ‘মুজিব মানে মুক্তি’তে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ধারাবাহিক ইতিহাসের সাথে বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর, যৌবন, মহান সংগ্রামী জীবন ও মহাপ্রয়াণ ৭ক্রমান্বয়ে সন্নিবেশিত হয়েছে। পাক-হানাদারদের সহযোগী যুদ্ধাপরাধীদের হিংস্র চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। তাই ‘মুজিব মানে মুক্তি’ নাটকটি ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে রচিত বিশেষ প্রযোজনা।
নাটকে অভিনয় করেছেন জিয়াউদ্দিন শিপন, নাবিল আহমেদ, আবির হোসেন অঙ্কন, আজিজুর রহমান সুজন, জুলফিকার আলী বাবু, মিজানুর রহমান, মূসা রুবেল, আমিনুল ইসলাম অহন, রাসেল রানা রাজু, তাজুল ইসলাম, মরিয়াম খান এ্যানি, আক্তার হোসেন, খাদিজা মোস্তারী মাহিন, হাবিবুর রহমান, মুক্তা আক্তার, নুর নবী, মারিয়াম আক্তার, পলি কুজুর, মোমিনুল ইসলাম, প্রিয়াংকা বিশ্বাস মেঘলা, মোঃ শাহ আলম সরকার (রঞ্জু), সুজন মাহাবুব, মুমু মাসুদ, আজমেরী এলাহী নীতি, শিল্পী এলাহী প্রমুখ।
৭-১৭ মার্চ ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮’-এর ধারাবাহিকতায় আজ ১৫ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে পরিবেশিত হবে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের নিয়ে অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি অ্যাক্রোবেটিক দলের পরিবেশনায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী।
সম্প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতির ফলে ভাষণটি বিশ্বের এক অনন্য দলিলে পরিণত হয়েছে। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের এই স্বীকৃতি উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ৭-১৭ মার্চ আয়োজন করেছে ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮’।
দশ দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজনে বরেণ্য শিল্পী,কবি, নারী, শিশু ও বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের অংশগ্রহণে বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে স্বরচিত কবিতা পাঠ, নৃত্য প্রযোজনা, সুর ও বাণীতে বঙ্গবন্ধু, চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মশালা, নাটক, অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী চিত্রাঙ্কন ও ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা।