খেলোয়াড় ও কোচ দুই ভূমিকাতেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে ইতিহাসন গড়েছেন। বিশ্বের সপ্তম ব্যক্তি হিসেবে এই কীর্তি গড়েন তিনি। শুধু ইতিহাসই নয়, ইউরোপ সেরার ট্রফি জিতে রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লরেনটিনো পেরেজের আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন ফরাসি এই কিংবদন্তী।
২০০২ এ রিয়ালকে খেলোয়াড় হিসাবে চ্যাম্পিয়নন্স লিগ জিতিয়েছিলেন ফ্রেঞ্চ লিজেন্ড জিদান, এবার কোচ হিসাবে প্রথম বছরই ইউরোপ-সেরার খেতাব জেতালেন।
এর আগে ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে খেলোয়াড় হিসেবে এবং ১৯৬০ ও ১৯৬৬ সালে কোচ থাকা অবস্থায় রিয়ালের হয়ে ট্রফি জেতে ম্যানুয়েল মুনোজ। খেলোয়াড় হিসেবে এসি মিলান এবং কোচ হিসেবে জুভেন্টাসের হয়ে এই কৃর্তি গড়েন জিওভান্নি ক্রাপাতোন্নি। সদ্য প্রয়াত ডাচ কিংবদন্তী জোহান ক্রুয়েফ আয়াক্সের হয়ে খেলোয়াড় ও বার্সেলোনার হয়ে কোচের ভূমিকায় চ্যাম্পিয়্স লিগ শিরোপা জিতেছেন।
সাবেক রিয়াল কোচ কার্লোস আনচেলত্তি তো আরো এগিয়ে। খেলোয়াড় হিসেবে দুই বার এবং কোচ হিসেবে তিনবার জিতেছেন এই শিরোপা। ১৯৮৯ ও ১৯৯০ সালে এসি মিলানের জার্সি গায়ে শিরোপা জেতেন আনচেলত্তি। আর কোচ হিসেবে ২০০৩ ও ২০০৭ সালে এবং রিয়ালের মাদ্রিদের হয়ে ২০১৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতেন এই ইতালিয়ান কোচ।
আরেক ডাচ তারকা ফ্রাঙ্কা রাইকার্ড খেলোয়াড় হিসেবে তিনবার ও কোচ ভূমিকায় একবার জিতেছেন এই শিরোপা। এসি মিলানের হয়ে ১৯৮৯, ১৯৯০ ও আয়াক্সের ১৯৯৫ এবং কোচ হিসেবে ২০০৬ সালে বার্সেলোনাকে শিরোপা জেতান রাইকার্ড।
আর সাবেক বার্সা ও বায়ার্ন মিউনিখ কেচা পেপ গার্দিওলা খেলোয়াড় হিসেবে একবার ও কোচ হিসেবে দুইবার এই শিরোপা জেতেন। ১৯৯২ সালে কাতালান জার্সিতে এবং ২০০৯ ও ২০১১ সালে কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতেন বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটির এই কোচ।
আর প্রতিদানের কথা যদি বলি, সেটা এখন দিনের মতো পরিস্কার। গত জানুয়ারির গোড়ায় রাফায়েল বেনিতেজকে যখন বরখাস্ত করা হয়, লিগে রিয়াল মাদ্রিদের অবস্থা বেশ খারাপ। ১৮ ম্যাচের ১১টি জয়, ৪ ড্র আর ৩ হারে নড়বড়ে অবস্থা। লিগ জেতা তো দূরের কথা, তখন হিসেব ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে কত কম পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করে রিয়াল।
কিন্তু সেখান থেকে দায়িত্ব নেওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদকে বাকি ২০ ম্যাচের ১৭টিতে জিতিয়ে আনেন জিদান, ড্র ২টি, একমাত্র হারটি ছিল এই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছেই। নগরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ওই হারের পরই অবশ্য লিগে টানা ১২ ম্যাচ জিতেছে রিয়াল। যেটি লা লিগার নতুন রেকর্ড। এর আগে অন্য কোনো দল লিগে টানা শেষ ১২টি ম্যাচ জিততে পারেনি। আর লা লিগা শিরোপা নির্ধারণে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত চরম প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছে জিদানের দল।
আর বেনিতেজ যখন বরখাস্ত হন তখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্ব চলছে। সেখান থেকে দলকে চ্যাম্পিয়ন করলেন জিদান।
তাই তো শিরোপা জয়ের পর ক্লাব প্রেসিডেন্ট পেরেজ বলেছেন, ‘জিদান আমার জন্যে, মাদ্রিদের জন্যে এবং ক্লাবের ইতিহাসের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। ২০০২ সালে খেলোয়াড় হিসেবে এটি জিতে(চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) ইতিহাস বদল করেছিল, আজ কোচ হিসেবেও সেটা করলো।’