রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ইউনেস্কো কি আপত্তি তুলে নিয়েছে? বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী বলছেন, হ্যাঁ।
রোববার বিদ্যুৎ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন: ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি তাদের আপত্তি তুলে নেয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় আর কোন বাধা নেই। এখন সবার উচিত হবে বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে কি হবে না এই আলোচনা-সমালোচনা থেকে সরে এসে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সঠিক।
‘এর মাধ্যমে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে তা সুন্দরবনের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় বয়ে আনবে বলে ইউনেস্কো যে ঘোষণা দিয়েছিল, তা থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি। পোল্যান্ডের কারাকোতে অনুষ্ঠিত ৪১তম সেশনে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়।’
তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ দল সঠিক চিত্র তুলে ধরে কমিটিকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে বলেই এ সফলতা এসেছে।
তৌফিক-ই- ইলাহী বলেন, আমাদের ব্যাখ্যার পরেই কমিটি এ সিদ্ধান্ত দেয়। তারা বৈজ্ঞানিক যুক্তির পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা কমিটিকে বলেছি, রামপাল প্রজেক্টে বিশ্বের সর্বশেষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
রামপাল নিয়ে গঠিত কমিটির ২১টি দেশের মধ্যে ১২টিই সমর্থন জানিয়েছে, অন্যান্য দেশও সমর্থন জানাতে প্রস্তুত রয়েছে– এমন তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, পোল্যান্ডের ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের হয়ে প্রস্তাবনাটি উপস্থাপন করেছে তুরস্ক। এরপর কমিটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা শুনে সব যুক্তি মেনে নিয়েছে।
‘রামপাল নিয়ে এতদিনের সমালোচনা থেকে সরে এসে এখন সবার উচিত কার্যক্রম মনিটরিং করা। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে কি না, পর্যবেক্ষণ করা।’
রামপালে ভারি কোনো শিল্প ও অবকাঠামো নির্মাণ না করতে ইউনেস্কো যে পরামর্শ দিয়েছে তা বিবেচনা হচ্ছে কি না– এমন প্রশ্নে তৌফিক-ই-এলাহী বলেন, সংস্থাটি বলেছে, ভবিষ্যতে যেন সেখানে ভারি শিল্প গড়ে তোলা না হয় সেজন্য তারা পরিবেশগত বিষয়গুলি পর্যবেক্ষণ করতে বলেছে। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি তুলে নিয়েছে।
রামপাল নিয়ে ইউনেস্কোর সাথে লবিং প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, লবিং বলতে কি বুঝাচ্ছে তা আমি বুঝি না।
সুন্দরবন এলাকায় পরিস্কার পানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুন্দরবনকে সুস্থ রাখতে ও ফ্রেশ ওয়াটারের ফ্লো বাড়াতে ভারতের সঙ্গে আরও আলোচনা করতে হবে। কারণ ফ্রেশ ওয়াটার আসে সেখান থেকেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, সঠিকভাবে কাজ পরিচালনা করা গেলে ২০১৯ সালের জুনে রামপাল থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উপস্থিত থাকলেও বক্তব্য রাখেননি।