বাংলাদেশ-ভারতসহ পৃথিবী জুড়ে বহু বাংলা ভাষাভাষী ছড়িয়ে আছেন। বাংলাদেশের মানুষ বাংলা ভাষার জন্য রক্ত দিলেও প্রযুক্তি দুনিয়ায় বাংলা ইউনিকোড লিপি উন্নয়নে এই দেশের মানুষের ব্যবহৃত বাংলাকে অনেকটা উপেক্ষা করা হয়েছে। এই অভিযোগ করে ডাক,টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ভাষাবিজ্ঞানীসহ সাধারণ ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা ও মতামতকে বাংলা ইউনিকোড লিপি উন্নয়নে বিবেচনায় রাখতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে বাংলা একাডেমির শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে বাংলা ভাষা অঞ্চলের জন্য বাংলা ইউনিকোড লিপি উন্নয়নে নিও ব্রাহ্মী জেনারেশন প্যানেলের সঙ্গে বাংলাদেশের গবেষকদের মতবিনিময় সভায় এই কথা বলেন মন্ত্রী।
বাংলা ভাষার জন্য বাংলাদেশের মানুষের অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বাংলা লিপি উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন: বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বাংলাদেশের বাঙালি বুকের রক্ত দিয়েছে। বাংলা ভাষার চর্চা ও বিকাশেও আমাদের অবদানই সবচেয়ে বেশি। মুনীর অপটিমার মাধ্যমে শহিদ মুনীর চৌধুরী বাংলা ভাষার প্রযুক্তিগত উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখেছেন তা অবিস্মরণীয়। বর্তমানে বাংলা লিপির উন্নয়নে কাজ করতে গেলে এই পটভূমিকে আমাদের স্মরণে রাখতে হবে।
বাংলা ভাষার লিপি উন্নয়নে বাংলাদেশকে যেন আর এড়িয়ে না যাওয়া হয় সেই তাগিদ দিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন: দুঃখজনক হলেও সত্য ইউনিকোড বাংলা লিপি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতামতকে অনেক ক্ষেত্রেই গৌণভাবে দেখেছে ফলে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অক্ষর ব্যবহারে আমরা সমস্যার সম্মুখীন হই। মনে রাখতে হবে বাংলা ভাষার ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তাই বাংলাদেশের ভাষাবিজ্ঞানীসহ সাধারণ ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা ও মতামতকে বাংলা ইউনিকোড লিপি উন্নয়নে বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার বাংলা ভাষার প্রযুক্তিগত ব্যবহারকে যুগোপযোগী এবং সহজসাধ্য করতে বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
সভায় স্বাগত ভাষণে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন: বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষার উন্নয়ন ও বিকাশে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করে আসছে। প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রণয়ন ও প্রকাশ একাডেমির যুগান্তকারী কাজ বলে দুই বাংলাতেই স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার সহজ এবং যথাযথ করতে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করেছি।
দিনব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার, অধ্যাপক ড. উদয় নারায়ণ সিংহ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার, ড. মনিরুজ্জামান, অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী, অধ্যাপক সৈয়দ শাহরিয়ার রহমান, সমীরণ গুপ্ত, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোস্তফা কামাল, অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান খান, ড. স্বরোচিষ সরকার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সুভাষ সিংহ রায়, গবেষক রাজীব চক্রবর্তী এবং থাইল্যান্ডের পিটিনান কুয়ারমর্নপাতানাসহ বিষয়সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।
মতবিনিময় সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন নিও-ব্রাহ্মী জেনারেশন প্যানেল (ঘইএচ)-এর কো-চেয়ার সমীরণ গুপ্ত।