নাইজেরিয়ায় প্রাণঘাতী লাসা জ্বরে এখন পর্যন্ত ৯০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকারি সংস্থা নাইজেরিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি)।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ৫৬ দিনে এই প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দিন দিন লাসা জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়ছে।
শুক্রবার প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, এই জ্বরে আক্রান্ত মোট ১ হাজার ৮১ জনের তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে নাইজেরিয়ার ইবোনাই, নাসারাওয়া, কোগি, বেন্যু, ওন্ডো এবং এডো প্রদেশের ১৪ স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন।
প্রদেশগুলো লাসা জ্বরের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী আইজ্যাক আডেউয়োল।
লাসা জ্বর কী
লাসা জ্বর (Lassa fever/Lassa hemorrhagic fever) সর্বপথম আবিষ্কার হয় ১৯৬৯ সালে নােইজেরিয়ার বোর্নো প্রদেশের লাসা শহরে। লাসা ভাইরাস নামের এক ধরনের জীবাণুর সংক্রমণে রোগটি হয়। এই ভাইরাস আবার সহজাতভাবেই ন্যাটাল মাল্টিম্যামেট (Natal multimammate) প্রজাতির ইঁদুরের দেহের অংশ বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। এই প্রজাতির ইঁদুরের আদি আবাস সাব-সাহারান আফ্রিকা বা সাহারা মরুভূমির দক্ষিণাঞ্চলে।
কীভাবে ছড়াচ্ছে লাসা জ্বর
ইঁদুর সাধারণত বদ্ধ, জিনিসপত্রে বোঝাই, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় থাকতে পছন্দ করে। জায়গাটা যদি খাবারের গুদাম বা স্টোররুম হয় তাহলে তো কথাই নেই। এ কারণেই লাসা ভাইরাস দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
কোনোভাবে ন্যাটাল মাল্টিম্যামেট ইঁদুরের মলমূত্রের সংস্পর্শে এলে মানুষ লাসা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এছাড়াও ফাটা বা ক্ষত হওয়া ত্বক অথবা শ্লেষ নিঃসরক ঝিল্লির মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে লাসা জ্বরের জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে।
উপসর্গ
লাসা জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গের মধ্যে রয়েছে: জ্বর, মুখমণ্ডল ফুলে যাওয়া, মাংসপেশী ঢিলে হয়ে যাওয়া, বমিভাব, রক্তবমি, ডায়রিয়া (রক্তসহ), পেটব্যথা, কোষ্ঠবদ্ধতা, কাশি। তবে বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মতে, ইবোলা এবং মারবার্গের মতো ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বরের উপসর্গের থেকে লাসা জ্বরের উপসর্গকে আলাদা করা খুব কঠিন।