৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সারা দেশে এর মধ্যেই ভোটের হাওয়া লেগেছে। দু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদে সারা দেশ এখন উৎসব মুখর। দীর্ঘ ৬৮ বছর পর বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হওয়া উত্তরবঙ্গের ছিটমহলের বাসিন্দারা এই প্রথম ভোট দিতে যাচ্ছেন।
প্রথম ভোট প্রদানের আনন্দই আলাদা। সারা দেশের মতো ভোটের হাওয়া লেগেছে সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোতে, তাদের আনন্দ আরো বেশি। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া দেশের সর্ব বৃহৎ ছিটমহল কুড়িগ্রামের দাসিয়ার ছড়াসহ ১১১টি ছিটমহলের ভোটারদের মাঝে বিরাজ করছে খুশির আমেজ। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই চলছে ভোট নিয়ে আলোচনা। ছিটবাসীদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবে এমন সরকারই বেছে নেবেন তারা।
দীর্ঘ ৬৮ বছরের বঞ্চনার পর ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট মধ্যরাতে বাংলাদেশ-ভারত ছিট বিনিময় হয়। এতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পায় কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট ও পঞ্চগড় জেলার ১১১টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ৩৭ হাজার ২৬৯ জন মানুষ। এসব ছিটমহলে ভোটার প্রায় ২২ হাজার। এর মধ্যে দেশের সর্ববৃৃহৎ বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ায় ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ১৭২।
ভোটার হওয়ার পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জীবনের প্রথম ভোট প্রয়োগ করে দেশের সরকার নির্বাচন করতে পারবেন বলে গর্ববোধ করছেন তারা। নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের স্বার্থে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই তারা ভোট দেয়ার কথাও জানিয়েছেন। ছিট বিনিময়ের পর থেকে সরকারি নানামুখী কর্মসূচির আওতায় দেশের উন্নয়নে মূল ধারায় একীভুত হওয়া এসব মানুষের আশা নির্বাচিত নতুন সরকার তাদের এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তা। দেশ থেকেও যারা কোন দেশের নাগরিক ছিলেন না তাদের বাংলাদেশে অর্ন্তভুক্ত করে সরকার নাগরিকত্ব দিয়েছে ২০১৫ সালে। এই আনন্দই অন্যরকম। জন্মভূমির ঠিকানা পাওয়া এই মানুষগুলো প্রথম ভোট যেন নির্বিঘ্নে দিতে পারেন আমরা এই কামনা করি।
আমরা মনে করি তাদের প্রথম ভোটের সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবর্মূতিও জড়িত। ফলে যে কোনো অবাঞ্ছিত ঘটনা থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।