এশিয়া ও ইউরোপের ৫৩টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের রাজধানী নাইপিদোতে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী আসেমের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ১৩তম সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ এশিয়া ও ইউরোপের ৫১টি দেশের প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। এমন একটি সময়ে মিয়ানমারে এই সম্মেলন, যখন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা সারাবিশ্ব জুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছে। এই সম্মেলনকে ঘিরে মিয়ানমারে যাবার আগে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো ঘুরে দেখে গেছেন। তাদের মধ্যে ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফেদেরিকো মঘেরিনি, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগট ওয়ালস্টার ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো। তাদের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার কর্মকর্তারাও তাদের সঙ্গে ছিলেন এবং পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ তা ব্যাখ্যা করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেরাও রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের মুখ থেকে শুনেছেন কীভাবে তাদের উপরে নির্যাতন করা হয়েছে সেই সত্যভাষণ। আসেম সম্মেলনে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরার ঘোষণা দিয়ে গেছেন তারা। তার ফলশ্রুতিতে সম্মেলনে ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মঘেরিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে অং সান সুচিকে তাগিদ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরাতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে অবশ্যই সমঝোতা চুক্তি প্রয়োজন বলেও জানান ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান। আর এ প্রক্রিয়ায় ইইউ সবসময় পাশে থাকবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি। নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে তার বক্তব্য পেশ করবেন, সেখানেও বিষয়গুলো জোরালোভাবে উচ্চারিত হবে বলে আমাদের ধারণা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা দাবির প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গারা এই অনিশ্চিত ও অমানবিক জীবন ঠেলে তাদের দেশে ফিরে যাক, এই আমাদের প্রত্যাশা।