বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতকে জেতালেন রোহিত শর্মা ও জসপ্রিত বুমরাহ। কিন্তু ম্যাচের আসল জয়ী ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধা। ম্যাচের সব আলোই যেন কেড়ে নিলেন ওই ভদ্রমহিলা। মঙ্গলবার এজবাস্টনে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। গ্যালারিতে ৮৭ বছরের চারুলতা প্যাটেলের বাঁশি বাজানোর ছবি টিভিতে দেখার পরই হইচই শুরু। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছেন তিনি।
ম্যাচের পর চারুলতার সঙ্গে দেখা করতে যান ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মারা। প্রবীণ ভক্তের কাছ থেকে তারা আশীর্বাদও নেন। সেই ছবি ও ভিডিও ক্রিকেট ওয়াল্র্ড কাপ টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও টুইট করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘কী দারুণ ব্যাপার! ভারতের টপঅর্ডার সুপারস্টার বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা এজবাস্টনে এক ভারতীয় ভক্তের সঙ্গে বিশেষ মুহূর্ত কাটালেন।’
কোহলিও পরে চারুলতার সঙ্গে ছবি টুইট করেন। তাতে লেখেন, ‘তার বয়স ৮৭। এ রকম প্যাশনেট ফ্যান আমার ক্রিকেট জীবনে দেখিনি। বয়স শুধুই সংখ্যা মাত্র। প্যাশনই আপনাকে অনেক দূর নিয়ে যায়। তার আশীর্বাদ নিয়েই আমরা পরের ম্যাচে নামব।’
চারুলতা প্যাটেল জানিয়েছেন, ১৯৮৩তে কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারত যখন লর্ডসে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখনো মাঠে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
দ্য হিন্দুকে চারুলতা বলেন, ‘বিশ্বকাপ জেতার সময় আমি সেখানে (মাঠে) ছিলাম। যখন আমি প্রার্থনা করি, এটা সত্য হয় এবং আমি বলছি ভারত অবশ্যই বিশ্বকাপ জিততে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়াইয়ের ম্যাচে ২৮ রানে জয় পায় ভারত। এই জয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালও নিশ্চিত করে ২০১১’র বিশ্বজয়ীরা।
ভুভুজেলা হাতে অব্যাহতভাবে কোহলি-রোহিতদের জন্য উৎসাহ দেয়ার ছবি নজর কেড়েছে ভারতীয় শিল্পপতি আনন্দ মহিন্দ্রার। সেই কারণে বিশ্বকাপে ভারতের বাকী ম্যাচে যাতে চারুলতা গ্যালারিতে উপস্থিত থাকতে পারেন, সেই জন্য তার টিকিটের খরচ বহন করার কথা ঘোষণা করেন তিনি।
ক্রিকেটভক্ত হিসেবে বেশ সুনাম রয়েছে আনন্দ মহিন্দ্রাও। কিন্তু কখনোই তিনি ভারতের ম্যাচ দেখতে যান না। কারণ কুসংস্কারবশত তিনি মনে করেন, মাঠে উপস্থিত থাকলে ভারত নাকি হেরে যাবে। ম্যাচের পরে টুইট করে তিনি লেখেন, ‘ম্যাচের শেষ ওভারটা দেখলাম। খুব টেনশন হচ্ছিল। শাবাশ! যে বৃদ্ধা গ্যালারিতে উপস্থিত ছিল, তিনি যেন সেমিফাইনাল-ফাইনালেও উপস্থিত থাকেন। ওনাকে ফ্রি টিকিট দেয়া হোক।’
এরপরেই একজন ব্যক্তি পাল্টা টুইট করে তাকে অনুরোধ করেন যাতে আনন্দ মহিন্দ্রা চারুলতার টিকিট স্পনসর করেন। প্রস্তাবটি সঙ্গে সঙ্গে লুফে নেন তিনি। আরেকটি টুইট করে মহিন্দ্রা গ্রুপের কর্ণধার জানান, ‘আমি জানতে পেরেছি উনি কে। আমি কথা দিচ্ছি ভারতের বাকী ম্যাচে তার টিকিটের খরচ আমি বহন করব।’
আনন্দ মহিন্দ্রার এই পদক্ষেপে স্বাভাবিকভাবেই খুশি ভারতীয় সমর্থকরা।