বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবি মানার আশ্বাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দিনের অনশন ভাঙবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিসুর রহমান।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠকের পর এই কথা জানান তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যে শহীদ মিনারে গিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী নিজে শিক্ষকদের অনশন ভাঙাবেন বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের এই নেতা।
এই বৈঠকের আগে অনশনের তৃতীয় দিনে বৈষম্য দূর করতে পদক্ষেপ ঘোষণার আগ পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছিলেন অনশনকারীরা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই অনশন কর্মসূচিতে কয়েক হাজার শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন। তিনদিনের অনশনে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনদিন না খেয়ে থাকায় বেশ কয়েকজন শিক্ষককে শিরায় স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে আহসান হাবিব সাগর নামের এক শিক্ষকের অবস্থা কিছুটা গুরুতর বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক অনলাইন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমদ।
তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: রোববার অনশনের দ্বিতীয় দিনে ত্রিশ জনেরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ তৃতীয় দিনে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়েছেন। তবুও প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর করার আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে।
আহসান হাবিব আরও বলেন: আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন।
কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে। সহকারী শিক্ষকরা এই বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিতে ১১তম গ্রেডে বেতন চাই।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। শীতের রাতেও শিক্ষকেরা শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের ডাকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সহকারী শিক্ষকদের আটটি সংগঠন এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।
সোমবার শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে শহীদ মিনারে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। গতকাল রোববার শিক্ষকদের অনশনে সংহতি জানান কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।