‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষাপটে দেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে হাইকোর্টে অভিমত দিয়েছেন ছয় অ্যামিকাস কিউরি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, কামাল উল আলম, আবদুল মতিন খসরু, শাহদীন মালিক, ফিদা এম. কামাল ও প্রবীর নিয়োগী সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে তাদের অভিমত দেন। এক্ষেত্রে রিট করার আগে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রতিকার চেয়ে রিটকারীর লিগ্যাল নোটিশ না দেয়া এবং রিটকারি এবিষয়ে কিভাবে সংক্ষুব্ধ ও জনস্বার্থের কী সম্পর্ক, এমন প্রশ্নে এই রিটের গ্রহণযোগ্যতা নেই বলে অভিমত দেন অধিকাংশ অ্যামিকাস কিউরি।
তবে এবিষয়ে রিটকারীর রিট করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে বলে মত দেন একজন অ্যামিকাস কিউরি। এছাড়া আল জাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগসহ সকল মাধ্যম থেকে অপসারণ বা বন্ধের প্রয়োজনীয়তা এবং বিদেশি টিভি চ্যানেলের বিষয়ে আমাদের আদালতের আদেশ দেয়া প্রসঙ্গে অ্যামিকাস কিউরিদের অভিমত শোনেন হাইকোর্ট।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে আল-জাজিরা টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। ওই প্রতিবেদনটি বিভ্রান্তিকর, বিদ্বেষমূলক ও মানহানিকর উল্লেখ করে দেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এনামুল কবির ইমন গত ৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিটটি করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শককে বিবাদী করা এই রিটে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুকসহ সকল অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়ে। এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই রিটের শুনানিতে রিটকারি আইনজীবী এমডি এনামুল কবির ইমন আল জাজিরার প্রচারিত ওই ভিডিও কন্টেন্টটি অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণে বিটিআরসির নিস্ক্রিয়তা রয়েছে বলে দাবি করেন।
বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব হাইকোর্টকে বলেছিলেন, ‘মাই লর্ড, আমরা কোন টেলিকাস্ট বন্ধ করতে বা ওটিটি প্লাটফর্ম থেকে ভিডিও সরাসরি সরাতে পারি না। তবে আদালত কোন আদেশ দিলে আমার ভিডিও কন্টেন্টগুলো সরানের জন্য ওটিটি প্লাটফর্ম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করি। সেক্ষেত্রে তার পদক্ষেপ নেন।’ একপর্যায়ে হাইকোর্ট এই রিটের গ্রহণযোগ্যতাসহ পাঁচটি বিষয়ে মতামত দিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ছয়জন আইনজীবীর নাম ঘোষণা করে ১৫ ফেব্রুয়ারী শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। সে অনুযায়ী আজ ছয়জন অ্যামিকাস কিউরি তাদের অভিমত দেয়ার পর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। ওইদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।