মুসলিম-ইহুদি সবার জন্য পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশপথগুলোতে লাগানো মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা।
মেজর জেনারেল ইয়োআভ মোর্ডেচাই নামের ওই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন, বিতর্কিত ওই মেটাল ডিটেক্টরের বিকল্প খুঁজছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে বিকল্প ব্যবস্থা কী নেয়া যেতে পারে সেই পরামর্শ চেয়েছেন তিনি মুসলিম বিশ্বের কাছে।
বিবিসি অ্যারাবিক’কে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি জর্ডানসহ অন্যান্য আরব দেশগুলো এই সমস্যার ভিন্ন একটি নিরাপত্তামূলক সমাধান জানিয়ে পরামর্শ দেবে। যে কোনো পরামর্শ, হোক সেটা ইলেক্ট্রনিক, সাইবার বা অন্য আধুনিক প্রযুক্তি: ইসরায়েল সমাধানের জন্য তৈরি। আমাদের একটা নিরাপত্তামূলক সমাধান দরকার; রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নয়।’
দুই ইসরায়েলি পুলিশ নিহতের ঘটনায় গত সপ্তাহে পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ বন্ধ করা দেয়ার পর থেকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব বেড়েই চলেছে।
এর ধারাবাহিকতায় রামাল্লাহর ওয়েস্ট ব্যাংক ও হালামিশ এলাকায় ইসরায়েলি বসতিতে শনিবার ছুরি নিয়ে চালানো হামলায় তিন ইসরায়েলি নিহত ও একজন আহত হয়।
১৪ জুলাই পুলিশ হত্যার ঘটনায় পরে পুলিশের পাল্টা গুলিতে নিহত হামলাকারী তিনজনকে প্রথমে ইসরায়েলি আরব বলা হলেও পরে নিশ্চিত করা হয় তারা ফিলিস্তিনি। ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট এবং মুসলিমদের কাছে হারাম আল শরিফ নামে পরিচিত ওই স্থানটিতে হামলার পর কাছে থাকা আল-আকসা মসজিদ কিছু সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয় ইসরায়েলি পুলিশ।
এর দু’দিন পর মসজিদ খুলে দিলেও ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ নতুন ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করে মসজিদ ও এর আশপাশের এলাকায়। জায়গায় বসানো হয় মেটাল ডিটেক্টর।
অন্যদিকে মুসলিমদের মসজিদ প্রাঙ্গণের গেটের বাইরে নামায আদায় করতে বলা হয়। এরপরও মসজিদের ঢুকতে চাইলে কড়া তল্লাশি পেরিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের আরোপিত অতিরিক্ত নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মকানুনের প্রতিবাদে ১৪ তারিখে শুরু হয় বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনি মুসলিমরা মেটাল ডিটেক্টর পেরিয়ে মসজিদে ঢুকে নামায পড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাদের দাবি, মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে সব মেটাল ডিটেক্টর তুলে নিতে হবে।
কিন্তু ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এজেন্সি শিন বেত মেটাল ডিটেক্টরগুলো সরিয়ে নেয়ার পরামর্শ দিলেও স্থানীয় পুলিশ বলছে, এখনই সেগুলো সরানো যাবে না।