জেরুজালেমের হারাম-আল-শরিফ মসজিদ থেকে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরিয়ে নেওয়ার খবর প্রকাশের পরই সেখানে উল্লাস প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনিরা।এর ফলে গত দুই সপ্তাহ ধরে সেখানে যে উত্তেজনা চলছিলো তার অবসান ঘটলো।
বুধবার রাতে ইসরায়েলের কর্তৃক আল আকসার প্রবেশ পথ বসানো মেটাল ডিটেক্টর ও নজরদারি লোহার ব্যরিকেড সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা করলে এই সংকটের আপতত অবসান ঘটলো।
মেটাল ডিটেক্টর বসানোর প্রতিবাদে মসজিদের প্রবেশ পথেই বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল। নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রত্যাহারের পর তা আগের স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মুসলিমদের কাছে হারাম আল-শরিফ পরিচিত মসজিদটি ইহুদিদের কাছেও টেম্পল মাউন্ট নামের অন্যতম পবিত্র স্থান।এক সপ্তাহ আগে দুজন ইসরাইলি পুলিশ নিহত হবার পর ইসরাইল কর্তৃপক্ষ হারাম-আল-শরিফ এলাকায় মেটাল ডিটেক্টর বসিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করে। পঞ্চাশ বছরের কম বয়সী লোকদের আল-আকসা মসজিদে নামাজ পড়তে আসতে দেয়া হয়নি।
সেখানে নামাজ পড়তে আসা প্যালেস্টাইন মুসলিমরা নিরাপত্তা বেষ্টনী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাস্তার ওপরই নামাজ পড়েন, আর নামাজের পর শুরু হয় বিক্ষোভ।
দুই পক্ষের সহিংসতায় চারজন ফিলিস্তিনি এবং তিনজন ইসরাইলি নিহত হয়। ইসরাইল বলছে, ভবিষ্যতে তারা এখানে এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে, যা সহজে দৃষ্টিগোচর হবে না।
এই স্থানটি ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদি এই তিন ধর্মের কাছেই পবিত্র স্থান। এবং এটি নিয়ে শত শত বছর ধরেই এ টানাপোড়েন চলছে।ইহুদিদের কাছে হারাম আল-শরিফ এলাকাটির নাম ‘টেম্পল মাউন্ট’ এবং এটিই তাদের ধর্মে সবচাইতে পবিত্র স্থান। ইহুদিরা বিশ্বাস করে, এখানেই নবী আব্রাহাম তার পুত্র ইসমাইলকে উৎসর্গ করার জন্য নিয়ে এসেছিলেন। এখানেই ছিল ইহুদিদের প্রথম ও দ্বিতীয় পবিত্র উপাসনালয়, যা ৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান বাহিনী ধ্বংস করে দেয়। এখানে একটি ব্যাসিলিকাও ছিল যা একই সাথে ধ্বংস হয়।
সেই উপাসনালয়ের কেবল পশ্চিম দিকের দেয়ালটিই এখনো টিকে আছে এবং এটিই এখন ইহুদিদের ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান।