বুধবার দুপুর। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রায় শুনলেন দণ্ডিতরা। এরপর তারা একে একে আদালত চত্ত্বর ত্যাগ করছিলেন। ঠিক সেই সময়ই তাদের একজন, বিচারকের জন্য আল্লাহ’র কাছে মাফ চেয়ে বলে উঠেন ‘আল্লাহ তায়ালা জজ সাহেবরে মাফ কইরে দিক’।
বুধবার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে আদালত থেকে কারাগারে নেয়ার পথে প্রিজন ভ্যানে থাকা সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গিদের একজন এ কথা বলেন।
প্রিজন ভ্যানে থাকা অন্য জঙ্গিদের কেউ কেউ বলেন, এ রায় ফরমায়েশি রায়, জজ সাহেব সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী এ রায় দিয়েছে, আমরা এ রায় মানি না।
এ সময় প্রিজন ভ্যানের অন্য প্রান্ত থেকে আরেক জঙ্গি বলে উঠেন, ‘আল্লাহ তায়ালা জজ সাহেবরে মাফ কইরে দিক, এ রায় আমরা মানি না।’
বুধবার একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ আদালতে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান এবং খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ যাদের
১. লুৎফুজ্জামান বাবর, ২. মো. আব্দুস সালাম পিন্টু, ৩. মাওলানা মোহাম্মদ তাজউদ্দিন, ৪. মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, ৫. মো. আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে মো. ইউসুফ ভাট, ৬. আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মাদ ওরফে জিএম, ৭. মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, ৮. মহিবুল্লাহ মফিজুর রহমান ওরফে অভি, ৯. মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর, ১০. আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, ১১. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ১২. হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, ১৩. হোসাইন আহম্মেদ তামিম, ১৪. মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জানদাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, ১৫. মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ওরফে খালিদ সাউফুল্লাহ ওরফে শামিম ওরফে রাশেদ, ১৬. মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন, ১৭. মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ১৮. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম এবং ১৯. মো. হানিফ।
এদের বিরুদ্ধে ৩০২, ৩৪ এবং ১২০ ধারায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ যাদের
১. তারেক রহমান, ২. হারিছ চৌধুরী, ৩. শাহাদত উল্যাহ ওরফে জুয়েল, ৪. মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে পীর সাহেব, ৫. মাওলানা সাব্বির আহমদ, ৬. আরিফ হাসান ওরফে সুমন, ৭. হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, ৮. আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, ৯. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, ১০. মহিবুল মুত্তাকিন, ১১. আনিসুল মুরছালিন, ১২. মোহাম্মদ খলিল, ১৩. জাহাঙ্গীর আলম বদর, ১৪. মো. ইকবাল, ১৫. লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, ১৬. কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, ১৭. মুফতি শফিকুর রহমান, ১৮. মুফতি আবদুল হাই এবং ১৯. রাতুল আহমেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবু।
আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দেখুন ভিডিওতে: