‘একাত্তরের যীশু’ ও ‘গেরিলা’র পর নিজের তৃতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে আসছেন প্রখ্যাত নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় ছবির নাম ‘আলফা’। আসছে ২৬ এপ্রিল দেশব্যাপী মুক্তি পেতে যাচ্ছে ছবিটি। কিন্তু তার আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে হয়ে গেলো ছবির বিশেষ প্রদর্শনী।
এদিন সন্ধ্যা ৭টায় ‘আলফা’র বিশেষ প্রদর্শনী দেখতে বিকেল থেকেই আগারগাঁওয়ের ফিল্ম আর্কাইভের মিলনায়তনে ভিড় করতে থাকেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। কে ছিলেন না বিশেষ এই প্রদর্শনীতে!
বিকেল থেকেই আগারগাঁয়ের বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ-এর মিলনায়তন ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রের প্রবীণ-নবীন নির্মাতা, অভিনেতা, নাট্যকর্মী, মঞ্চকর্মী, আর্টিস্ট, চলচ্চিত্র আলোচক, কবি, লেখক, সাংবাদিকসহ শিল্পের সমস্ত শাখার মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। ফলত ‘আলফা’র প্রদর্শনী শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় ত্রিশ মিনিট পর।
কারো যেন কোনো তাড়া নেই। মনের আনন্দে কথায় মেতে ওঠেন সবাই। ‘আলফা’ নির্মাতার ‘একাত্তরের যীশু’ ও ‘গেরিলা’ নিয়ে এসময় কথা বলতে দেখা যায় অনেককে। তবু ‘আলফা’ কেমন হবে, নাকি আগের ছবিগুলোর মতোই অনুমেয়, সেকথায় যেন আলাদা আলাদা জটলায় দাঁড়িয়ে ভাবছিলেন শিল্পকলার নবীন-প্রবীণেরা!
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ইমপ্রেস টেলিফিল্ম-এর কনসালটেন্ট (ফিল্ম) ও নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন জানালেন, এখন ‘আলফা’ দেখার সময়। মুহূর্তেই জটলা ভেঙে মিলনায়তনে আসন গ্রহণ করেন সকলে। কানায় কানায় পূর্ণ মিলনায়তনে শুরু হয় ‘আলফা’ প্রদর্শনী। ঘোরে মজেন ফিল্ম আর্কাইভ মিলনায়তনে বসা প্রতিটি দর্শক!
টানা দেড় ঘণ্টা। পিনপতন নীরবতা পুরো হলরুম জুড়ে। টুঁ শব্দটি নেই। দৃশ্যের পর দৃশ্যের ভেতর দিয়ে নির্মাতা দর্শককে নিয়ে যান অপার ঘোরের ভেতর। সুররিয়াল জীবন, আবার রূঢ় বাস্তবতায় ঠাঁসা। দার্শনিক ভঙ্গিতে রাষ্ট্রের অনেক স্পর্শকাতর বিষয়কে ছুঁয়ে যায় ‘আলফা’র গল্প, চরিত্ররা। তুমুল করতালিতে শেষ হয় বিশেষ প্রদর্শনী।
দর্শক সারি থেকে মাইক্রোফোন হাতে সামনে উঠে আসেন আবু শাহেদ ইমন। দর্শকের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন ছবির নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা চিত্রশিল্পী আলমগীর কবীর, অভিনেত্রী দোয়েল ম্যাশ ও মুস্তাফিজ নুর ইমরানকে।
দর্শকের উদ্দেশ্যে ইমন বলেন, এবার ‘আলফা’ দেখে আপনাদের কেমন লাগলো, ছবি নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে সরাসরি বলতে পারেন। হাত তুলেন অনেকে। বিশেষ করে ‘আলফা’ নিয়ে নিজেদের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন প্রবীণ নির্মাতা সালাহ উদ্দিন জাকী, মোরশেদুল ইসলাম, আবু সাইয়ীদ, মইনুদ্দিন খালেদ ও ফৌজিয়া খানসহ অনেকে।
সবাই ‘আলফা’ ছবি নিয়ে নিজেদের মুগ্ধতার কথা জানান। অনেকে এই ছবির প্রশংসা করতে যেয়ে বলেও ফেলেন যে, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু এই বয়সে এমন দুর্দান্ত ছবি উপহার দেবেন সেটা কেউ ভাবেওনি!
ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যানারে নির্মিত এ সিনেমার কাহিনী, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করছেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। সম্পাদনায় আছেন ক্যাথরিন মাসুদ। ছবির কার্যনির্বাহী প্রযোজক হিসেবে আছেন এশা ইউসুফ।