লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ড পেসার জফরা আর্চারের বাউন্সারে আঘাত পেয়ে কেঁপে উঠেছিলেন স্টিভেন স্মিথ। কেঁপে উঠেছিল ক্রিকেট বিশ্বও। মাঠে উপস্থিত খেলোয়াড় থেকে শুরু করে টেলিভিশনের সামনের দর্শকরা, সবার মনেই হয়ত ভেসে উঠেছিল পাঁচ বছর আগের এক ভয়ঙ্কর বাউন্সারের স্মৃতি। যে বাউন্সার কেড়ে নিয়েছিল স্মিথেরই সতীর্থ-বন্ধু ফিলিপ হিউজের জীবন!
স্মিথ বলছেন, বন্ধু হিউজের সেই দুর্ঘটনার স্মৃতিই সেদিন ভাসছিল তার মনে, যখন আঘাতটা পেলেন। মাঠে পড়ে যাওয়ার পর নিজের পায়ে উঠে দাঁড়ানোর আগ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল, হিউজের মতো পরিণতিই হতে চলেছে তার।
‘আমার মাথায় তখন কয়েকটা বিষয় কাজ করছিল, বিশেষ করে বল আঘাত করার পর একটা অতীত স্মৃতি ফিরে এলো মাথায়। বুঝতেই পারছেন কোন ঘটনার কথা বলছি, আমার মাথায় তখন সর্বপ্রথম ওই ভাবনাটাই কাজ করছিল।’
২০১৪ সালের শেফিল্ড শিল্ডের সেই মর্মান্তিক ম্যাচটিতে ছিলেন না স্মিথ। ম্যাচে ভয়ঙ্কর এক বাউন্সার এসে আঘাত হানে হিউজের মাথায়। লর্ডসে আর্চারের বাউন্সার ঠিক একইভাবে কাবু করেছে স্মিথকে। তবে অজি ব্যাটসম্যান পাশে পেয়েছিলেন ভাগ্যকে। আঘাতের ধাক্কা হিউজকে আর ফিরতে দেয়নি, কিন্তু স্মিথ ঠিকই পেরেছেন, মাথায় না লেগে বল কানের নিচে ঘাড়ের মাঝের অংশে লাগাতেই হয়ত রক্ষা! শুধু তাই নয়, এক ঘণ্টা পর এসে লড়াকু ইনিংসে স্মিথ পেয়ে যেতে বসেছিলেন সেঞ্চুরিও।
মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে দারুণ লড়াইয়ের হেডিংলি টেস্ট খেলতে পারেননি স্মিথ। সেজন্য তার ভেতর খানিকটা আফসোস আছে, সেটা সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন অজিদের সাবেক অধিনায়ক।
‘ডাক্তার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে, আমার কেমন লাগছে। বললাম যেন রাতে ছয়টা বিয়ার খেয়ে ঘুমিয়েছি এবং সেই ছয়টা বিয়ার না খেয়েও এখন আমার ঠিক তেমনটাই লাগছে। আঘাতের পর কয়েকটা দিন মাথার মধ্যে ঘোলাটে একটা ভাব ছিল। যদিও বিষয়টা ভালো নয়, তবে এটা হতেই পারে। দুর্ভাগ্যবশত একারণে দারুণ একটা টেস্ট ম্যাচ খেলা হল না আমার।’
যার আঘাতে এতকিছু সেই আর্চারকে কোনো দোষ দিচ্ছেন না স্মিথ। দুজনের একটা অলিখিত লড়াইয়ে ইংলিশ পেসারের চেয়ে এগিয়ে রাখছেন নিজেকেই। কারণ, বাউন্সারে কাবু করলেও আর্চার যে আউট করতে পারেননি তাকে!
‘কেউ কেউ বলছিলেন, আর্চার আমাকে পেয়ে বসেছিল। কিন্তু সত্যিটা হল, ও তো আমাকে আউট করতে পারেনি। ও আমাকে মাথায় আঘাত করতে পেরেছে, কারণ লর্ডসের উইকেট খানিকটা উঁচু-নিচু ছিল।’
‘আর্চার আমাকে আউট করতে পারেনি। বলতে দ্বিধা নেই যে তার চেয়ে বরং অন্য বোলাররাই আমার বিপরীতে সফল!’