‘আম্পান’ মোকাবিলায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে জরুরি খাবার ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ দিবে। ঝুঁকি মোকাবিলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুমও।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় সরকারের সাথে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। উপকূলীয় ১৩ জেলার রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি’র) স্বেচ্ছাসেবকরা যৌথভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোজজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে সতর্কতা বার্তা প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
পাশাপাশি, উপকূলীয় ১৩ জেলার মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৯টি জেলার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকরা।
এছাড়াও তথ্য সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় যোগাযোগের জন্য জাতীয় সদর দফতরসহ উপকূলীয় সব কয়টি জেলায় রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট কার্যালয়ে পৃথক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
এদিকে, পূর্বাভাস ভিত্তিক কার্যক্রমের আওতায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৯ জেলার (সাতক্ষীরা, খুলনা,বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালি, ভোলা, লক্ষীপুর ও নোয়াখালী) বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৪০ হাজার লোকের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার,পানি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ (মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক সাবান) ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রে পৌছাতে কিংবা কোন কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হলে সেসকল ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানে প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামসহ রেড ক্রিসেন্টের প্রশিক্ষত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানায়, সোসাইটির ত্রাণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় যোগাযোগের জন্য ডিজাস্টার রেসপন্স বিভাগের আওতায় জাতীয় সদর দফতরে কন্টোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন সোসাইটির ডিজস্টার রেসপন্স বিভাগের দায়িত্বরত উপ-পরিচালক মো: নুরুল আমিন, যার মোবাইল নম্বর-০১৭১২-৮৬৫১৫২। এছাড়াও তথ্যের জন্য ফোন করুন রেড ক্রিসেন্ট কন্ট্রোল রুমের এই ৯৩৫৫৯৯৫ নম্বরে, প্রতিদিন সকাল ০৬:০০ ঘটিকা থেকে রাত ১০:০০ ঘটিকা পর্যন্ত।
আজ ১৯ মে মঙ্গলবার সকালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্যোগে “জুম” ভার্চুয়াল মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। মিটিং এ সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব মো: ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন। সোসাইটির উপ-মহাসচিব মো: রফিকুল ইসলামসহ সোসাইটির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বরত পরিচালকগণ আইএফআরসি ও রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট মুভমেন্ট পার্টনারের প্রতিনিধিগণ অংশ নেয়।
অপরদিকে, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় কক্সবাজার জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সবকয়টি আশ্রয় ক্যাম্পে রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে দুর্যোগ পূর্ববতী ও পরবর্তী যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোন সমস্যা না হয়। ক্যাম্পে বসবাসরত মিয়ানমারের জনগনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে রেড ক্রিসেন্ট ফিল্ড হাসপাতাল ও ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। বিডিআরসিএস পরিচালিত পপুলেশন মুভমেন্ট অপারেশনের কমিউনিকেশন টিম জানায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকবিলায় প্রস্তুতি ক্যাম্প সেক্টর প্রধান ও ক্যাম্প ফোকালদের সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকরা যৌথভাবে ক্যাম্প গুলোতে প্রতিনিয়ত সতর্কতা সিগন্যাল পতাকা উত্তোলন ও সতর্কতা বার্তা প্রচার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব মো: ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় “আম্পান” মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা গুলোতে সতর্কতা বার্তা প্রচারসহ প্রস্তুতিমূলক সবধরণের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি দেশে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া লোকজনেরা আশ্রয়ের ক্ষেত্রে যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্যে রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে মাস্ক, হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক সাবান প্রদান করা হবে, যাতে তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণের সংকট না হয়।