শপথ অনুষ্ঠানের ভাষণে মার্কিন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কথা নয়, এখন কাজের সময়। আমেরিকাকে নতুন করে গড়তে হবে। আমেরিকা আর মাথানত করবে না। বিশ্ব থেকে কট্টরপন্থী সন্ত্রাসবাদ মুছে ফেলা হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ দেশকে নতুন করে গড়ে তোলার চেষ্টায় এক হয়েছে।
ট্রাম্প তার ভাষণে আরও বলেছেন, তিনি ওয়াশিংটন থেকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবেন জনগণের কাছে।
ভাষণের আগে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে এক ব্যাপক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, এখন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের স্বার্থেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কর্মক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। মানুষই সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার, বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ, সাবেক ফার্স্ট লেডি ও ট্রাম্পের সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে ডেমোক্র্যাট দলের বেশ কিছু আইনপ্রণেতা এ অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন। এমনকি অনেকে বিক্ষোভ করছেন।
এর আগে দুপুরে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ট্রাম্প। এরপর তিনি শপথবাক্য পাঠ করেন। শপথগ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প উদ্বোধনী ভাষণ দেন এবং তারপরেই হোয়াইট হাউসে প্যারেডের নেতৃত্ব দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের রীতি অনুযায়ী দিনের শুরুতে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টদের সরকারি অতিথি ভবন ব্লেয়ার হাউসে যান। সেখানে কিছু সময় কাটানোর পর একটি কালো রঙের গাড়িতে করে সস্ত্রীক হোয়াইট হাউসের কাছে গির্জায় প্রার্থনায় অংশ নেন ট্রাম্প। এ সময় তার মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প ও তার স্বামী তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য, নারী কেলেঙ্কারি, মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিসহ বিভিন্ন কারণে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী বিতর্কের সবকটিতে হেরে যাওয়ার পরও গত বছরের ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিশ্বকে চমকে দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পান রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নির্বাচনে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজে ভোটের মধ্যে ২৯০টি ভোট জিতে নেন ট্রাম্প। আর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন পান ২২৮ ভোট। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে গেলে ২৭০টি ভোট পেলেই চলে।
নির্বাচনের শুরু থেকেই জনমত জরিপগুলোতে এগিয়ে ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। এমনকি পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি কিংবা রাষ্ট্রপরিচালনার জ্ঞানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও ভোটের দৌড়ে হেরে যান হিলারি।