সংখ্যায় সর্বাধিক নাটক প্রচার হতে যাচ্ছে অভিনেতা তৌসিফ মাহবুবের। অন্যান্যবার তার ১৫ থেকে ২০টি নাটক প্রচার হলেও আসন্ন ঈদে জনপ্রিয় এ তারকার প্রায় ৫০টির মতো নাটক প্রচার হবে! বিস্ময়ের শোনালেো এটাই সত্যি। এর সঙ্গে একটি বেসরকারি টিভি ও ইউটিউবে ‘সেভেন সেড অব তৌসিফ মাহবুব’ নামে সাত দিনব্যাপী ঈদ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ঈদের কাজগুলো নিয়ে তৌসিফের সঙ্গে কথা হয় চ্যানেল আই অনলাইনের..
আপনার ৫০টির মতো নাটক প্রচার হচ্ছে। মান বজায় থাকবে তো?
আমি কখনো চাইনি যে ৫০টির মতো নাটক প্রচার হোক। গত দুই ঈদে প্যান্ডামিকের কারণে অনেক নাটক প্রচার হয়নি। এ বছর ভালোবাসা দিবসের কিছু কাজ জমে ছিল। ৫০টির মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ টি কাজ আগের করা। এবার ঈদের জন্য সর্বোচ্চ ২০টির মতো নাটক করতে পেরেছি, যেটি সব সময় করা হয়। নতুন পুরাতন মিলিয়ে সংখ্যা দাঁড়িয়ে ৫০টির মতো। আমার এক ফ্যান আমাকে ৪২টি নাটকের লিস্ট পাঠিয়ে বলল, রেটিং করে উপরে সিরিয়ালি ভালো কাজগুলো জানাতে। কিন্তু আমি কোনটা রেখে কোনটাকে নাম্বার ওয়ানে রাখবো বুঝতে পারিনি। সবগুলো ভালো কাজ। আবার এও হয়েছে, লিস্ট নাম দেখে মনে হয়েছে এটা আমার কাজ না। পরে ছবি দেখে মনে হয়েছে অনেক আগে করেছি। তবে আমি অবশ্যই লাকি, পরিকল্পনা না করেও একসঙ্গে এতো কাজ চলে এসেছে। মানসম্পন্ন কাজগুলোর একটা সেড হচ্ছে সেভেন সেড অব তৌসিফ।
এসব নাটকগুলোতে বৈচিত্রময় চরিত্র করতে পেরেছেন বলে মনে হয়?
চেষ্টা করছি ১০০ তে ১০০। একজন অভিনেতার সবধরনের কাজ করতে হয়। এরমধ্যে দর্শক ফান কমেডি এন্টারটেইনিং বা রোমান্টিক কাজ পছন্দ করে বেশি। তবে আমার পছন্দের ঘরানা হচ্ছে একটু থ্রিলার। এবার আমি কমেডি করার চেষ্টা করেছি ভেরিয়েশন রেখে। ভাষা, গেটাপে ভিন্নতা রেখেছি। এরমধ্যে ৭-৮টি কমেডি কাজ রয়েছে যা ক্রিটিকসে ফেলার মতো। সবকিছু মিলিয়ে কাজগুলো খুব সুন্দর হয়েছে। সবাই দেখুক, নিজেদের মতামত জানাক। আমি অপেক্ষায় আছি।
সেভেন সেড অব তৌসিফ নামে একটি উৎসব করা হচ্ছে। কয়েক বছরের ক্যারিয়ারে একজন অভিনেতাকে নিয়ে এমন উদ্যোগ কীভাবে দেখেন?
এটা সচরাচর সবার সঙ্গে ঘটে না। আগে কারো সঙ্গে ঘটেছে দেখিনি। প্রথমে যখন শুনলাম এমন হতে যাচ্ছে বিশ্বাস হয়নি। অনেকেই বলে, এটা করবো, ওটা করবো। কিন্তু সবকিছু সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু ফাইনালি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে স্পন্সর কোম্পানি এসএমসি ওরস্যালাইন এন প্লাস, প্রাণ এবং থ্রি ডিক্সটি ডিগ্রি। তারা আমার উপর বিশ্বাস রেখেছে যে তৌসিফ তার কাজগুলোতে কোয়ালিটি ছাড় দেইনি। এজন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ কাজগুলো আমার অনেকগুলো সেরার মধ্যে সেরা সাত। যা ঈদের সাতদিন একই সময়ে টিভিতে প্রচার হবে। এছাড়া আমার আরও কিছু বড় বড় কাজ আছে।
ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটকে আপনার নেহাল চরিত্র আলোচিত হয়েছিল। শেষ সিজনে আপনি ছিলেন না কেন? এই সিরিয়াল দিয়ে নতুন দর্শক পেয়েছিলেন?
আগে তৌসিফকে যতমানুষ চিনতো তারচেয়ে দ্বিগুণ মানুষ চিনেছে ব্যাচেলর পয়েন্টের জন্য। আগে অন্যান্য কাজ নিয়ে কথা বললেও ব্যাচেলর পয়েন্ট করার পর থেকে সবাই শুধু এই একটা নাটক নিয়েই কথা বলতো। কোথাও শুটিং করতে গেলে ছবি তুলতে এলে শুধু এই একটা নাটকের কথা বলে। কাজের পর সঙ্গে সঙ্গে এমন ফিডব্যাক পেলে দারুণ লাগে। সিজন থ্রি শেষ হওয়ায় আমি কাম আউট করি। প্যান্ডামিকের কারণে অনেক কিছু রেসট্রিক্ট করতে হয়েছে। সত্যি কথা বলতে, কাজ থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত অভিনেতার থাকে না। আমি সরে যাইনি। সবার মিউচ্যুয়াল বোঝাপড়ায় এন্ডিং হয়েছে। ব্যাচেলর পয়েন্ট শেষ হলে আমি পোস্ট দিয়ে উইশ করেছিলাম। তবে এখনো আমরা সবাই ভালো বন্ধু। পরিচালক কাজল আরেফিন অমি ভাই এখন বাংলাদেশের ওয়ান অব দ্য বেস্ট ডিরেক্টরস। তার কাজ দেখে কলও দিয়েছি। শেষ ভাইরাল গার্ল দেখে তাকে কল দিয়েছিলাম। প্রথম থেকেই আমি ওনার শুভাকাঙ্ক্ষী। তিনি তার ক্যারিয়ারে যে পয়েন্টে আছেন এটা অনেকেই চাইলেও পারেনা।
সিনেমাতে অভিনয় করতে ইচ্ছে হয়না? কবে দেখা যাবে বড়পর্দায়?
প্যান্ডামিক সব চিন্তাভাবনা ওলটপালট করে দিয়েছে। চাইলেই সবকিছু করতে পারছিনা। লম্বা সময় পিছিয়ে যেতে হয়েছে। সিনেমা নিয়ে ফ্রন্টফুটে যে ভাবনা ছিল সেটাকে একটু পেছাতে হয়েছে। আমার মতো সবাই পিছিয়েছে। সবাই আবার একসঙ্গে শুরু করবো। তবে আমি যে সিনেমা করবো সেটা বড় ক্যানভাসের হবে। সেটা করবো সেটা যেন অবশ্যই বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য পায় এমন কাজ করবো।
যারা তৌসিফের কাজ দেখার অপেক্ষায় থাকে, আপনার নিয়মিত দর্শক তাদের উদ্দেশে কিছু বলার আছে?
যারা অপেক্ষায় থাকেন তাদের জন্য সবকিছু বলার আছে। আমি নিজের জীবনে কোনো কিছুর জন্য অপেক্ষা করিনি। খুব অস্থির টাইপের মানুষ আমি। কিন্তু বিয়ের পর আমি বুঝেছি অপেক্ষা জিনিসটা কত সুন্দর। একজন মানুষ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করে আমি কখন ঘরে ফিরবো! আবার একজন মানুষ যখন আমার কাজগুলোর জন্য অপেক্ষার কথা আমাকে জানায়, তখন আমি আমার ব্যক্তিগত অপেক্ষা মিলিয়ে ফেলি। যারা আমার জন্য অপেক্ষা করে তাদের জন্য আমি আজ তৌসিফ। তারা না থাকলে আমার অভিনেতা হিসেবে কোনো অস্তিত্ব থাকতো না। তারা আমার খারাপ সময়ে আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে, আমার জন্য কেঁদেছে। খুব ইমোশনাল হয়ে বলছি, আই লাভ ইউ অল গাইজ।