চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘আমি যে ল্যাংগুয়েজ বের করেছিলাম, তার নাম হলো আরবা’

গবেষণামূলক ও সাক্ষাতকারভিত্তিক গ্রন্থ ‘ভাষা সংগ্রামীর বাংলাদেশ’ থেকে সংক্ষেপিত

তা ই মাসুম: তাহলে স্যার ৩১ জানুয়ারির পরের ঘটনাগুলো যদি একটু বলতেন?
আব্দুল মতিন: এইটাই তো স্ট্রাগল। ৩১ জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি কতদূর?

তা ই মাসুম: ২১ দিন
আব্দুল মতিন: ২১ দিন? এই ২১টা দিনের কী হলো? তারা কি মুভ করেছে? তারা কি ফান্ড কালেক্ট করেছে? কিছু করেছে? দে ট্রাইড বিহাইন্ড দ্যা সিন টু মেক এ কম্প্রোমাইজ উইথ দ্যা গভর্নমেন্ট। আপনারা কি এগুলো লিখবেন?

তা ই মাসুম: হ্যাঁ।
আবদুল মতিন: এগুলো কি ঘটনা করবেন? আমার রেফারেন্স দিয়ে দিবেন। আপনাদের যদি কোনো অসুবিধা হয় আমার রেফারেন্সে বলবেন। আই উইল ফেস ইট।

তারা এখানে যে ফান্ড তুলেছিল, আমরা যেখানে ২১ শে’র ব্যাপারে, লাখ লাখ টাকা তুলেছি সেখানে তারা কয়েক হাজার টাকাও তুলতে পারে নাই, ওটা সর্বদলীয়।

এই অবস্থা ছিল, তো কী করবে? এবং তারা চাচ্ছে যে, কম্প্রোমাইজ করা। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করা। তো ১৪৪ ধারা যদি সেদিন ভঙ্গ না হতো তাহলে কি কিছু হতো?

এবং তারা ক্লেইম করে!

এখন সেই জায়গায় সেই ফাইটটার মধ্যে একটু বলি সংক্ষেপে। যে, এই দুই কমিটির মধ্যে স্ট্রাগলটা কি হলো? ৪ ফেব্রুয়ারি, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম কমিটির একটা মিটিং ডাকলাম, মিটিং দিলাম মার্চ (প্রদক্ষিণ) করার, সমস্ত ঢাকা শহর আমরা প্রদক্ষিণ করবো এবং সেখান থেকে ফিরে আসবে এইখানে ইউনিভার্সিটি ময়দানে। ওই খানে ফিরে এসে আমরা বললাম, আমাদের একটা ডেট থাকতে হবে। এই মিটিংয়ে কিন্তু ফ্রম দ্য পিপল, নট ফ্রম দ্য কমিটি, গাজীউল হক ওয়াজ প্রেসিডেন্ট। গাজীউল হক, হি ওয়াজ দ্যা পপুলার ম্যান। তার ভয়েস ছিল, ভাল অর্গানাইজার ছিল। সব ছিল।

তা ই মাসুম: গাজীউল হক কিসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন?
আব্দুল মতিন: এই যে ৪ ফেব্রুয়ারি যে মিটিং হয়।

তা ই মাসুম: ওটা হলো ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের?
আবদুল মতিন: ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিটিং করছি। হি ওয়াজ ইলেক্টেড, যদিও সে কমিটির মেম্বার না হতে পারে ইউনিভার্সিটির ছাত্র তো? সো হি ওয়াজ ইলেক্টেড, মেড প্রেসিডেন্ট! বুঝলেন?

ত ই মাসুম: জ্বি
আবদুল মতিন: গাজীউল হককে যদি জিজ্ঞেস করেন, তাহলে তার কাছ থেকে কনফার্ম করে নিবেন যে, আপনি যে ওই সময় প্রিজাইড করলেন? পরে ২১ তারিখ প্রিজাইড করলেন? আপনি কি কম-সম লোক না-কি? দুইটা ভাইটাল মিটিং এ আপনি প্রিজাইড করছেন। আপনারা কার দ্বারা নির্বাচিত হচ্ছেন? ফ্রম হোয়াট কমিটি? আপনি ওই কমিটির মেম্বার হচ্ছেন না কেন? হোয়াই ইউ আর নট মেড ইভেন মেম্বার? হোয়াট টু স্পিক অব কনভেনার? হোয়াট? হোয়াট ইজ দ্য রিজন? এটা জিজ্ঞেস করবেন একটু। বুঝলেন?

আপনি ওইটা একটু কনফার্ম করে নিবেন যে, এই ব্যাপারটা আমাদের কাছে আশ্চর্য লাগছে, আপনি প্রিজাইড করছেন, আর তো কেউ প্রিজাইড করছে না? প্রেসিডেন্ট তো দুইটা হচ্ছে না? তখন সে সেকেন্ড টাইম, হি ওয়াজ প্রোপোজড বাই মুকুল, এম আর আখতার মুকুল। হি ওয়াজ প্রপোজার। অ্যান্ড সেকেন্ডেড বাই সমবডি এলস। এটা প্রপোজাল।

আর ফার্স্ট টাইমে ৪ ফেব্রুয়ারি, ব্র্যাকেটে লিখে দেন ফোর্থ ফেব্রুয়ারি। এটা প্রপোজ করেছিলাম আমি ২১ ফেব্রুয়ারি আমরা গণ পরিষদে যাব বাংলা ভাষার দাবি নিয়ে। এগুলা থাকা দরকার। সর্বদলীয় কমিটি। ২০ তারিখ রাতে। সেখানে সিদ্ধান্ত হলো, সেজন্য জিজ্ঞাসা করলাম, কে সিদ্ধান্ত করলো? সেইখানে আমরা বললাম, কোথায় ডিসাইড হবে? কখন? ২১শে তো আমরা অথরাইজড। এই যে ২১শে কমিটি, সর্বদলীয় কিমিটি সেইটা থেকে আপনারা ডিসাইড করেন।
বলছে যে, এখান থেকে আমরা করে নেই (২০ ফেব্রুয়ারি রাতে)। এবং তারা ইনসিস্ট করছে সর্বদলীয় কমিটি।

আমরা বললাম যে, ভোটাভুটি করতে পারেন, কিন্তু ভোটাভুটিতে ডিসিশন হবে না। এটা বলে নিতে পারেন, তাহলে পরে আমরা মিটিং কনটেস্ট করব। এবং ঠিক আছে এখানে ভোটাভুটি হবে না। কালকে ২১ শে ফেব্রুয়ারি ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রদের মিটিংয়ে এটা হবে। এখানে হইল এবং ২১শে কি হলো?

যখন শামসুল হক প্রস্তাব করলেন, তার পক্ষে একজন লোকও থাকল না। নো হ্যান্ডস! ১২ হাজার ১৩ হাজার ছাত্র-ছাত্রী, একটা হাতও উঠল না!

অন্যদিকে আমরা যখন বললাম এবং আমোদের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা বারো হাজারের মতো, তারা বলল যে, আমরা ১৪৪ ধারা মানি না। মানব না। এই তো সিদ্ধান্ত ইউনিনোমাসলি সিদ্ধান্ত হয়ে গেল। এইটা যখন মেডিকেল কলেজে পর্যন্ত পৌঁছেছি। আমরা ২টা স্টেজ করেছিলাম, একটা হইল মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত যাবো।

আরেকটা হল মেডিকেল কলেজ থেকে রাস্তা পার হয়ে অ্যাসেম্বলি হাউজ যেটা ঐ জগন্নাথ হল সেইখানে যাবো। জগন্নাথ হলের অ্যাসেম্বলি হল, ঐখানে মতামত কি? তাদের মতামত, অ্যাসেম্বলি মেম্বার যারা তিনশ লোক। এই তিনশ লোকের মতামত আমরা চাই।

তোমরা কি চাও জাতীয় প্রতিনিধি হয়ে? তোমরা কি বল? একেবারে প্রপার পার্সন তোমরা, যদি এক ভোটও না পাইতাম, না পাইতাম। তারপরে অন্যভাবে সিদ্ধান্ত করতাম আমরা। আমরা ডিসাইডিং ফ্যাক্টর, দি স্টুডেন্টস। ইন দি মিন টাইম, আমরা সমস্ত কান্ট্রি ওয়াইড গোপনে গোপনে কাজ করেছি।

দে ডিড নট রেইজ এনি ফিঙ্গার! এই হল সর্বদলীয় কমিটি! তো এই সমস্ত আপনি লিখবেন? এ ঘটনাগুলো আপনি দিবেন?

তা ই মাসুম: আমি মাথা নেড়ে বললাম দিব।
আব্দুল মতিন: ধন্যবাদ আপনি যদি এগুলো দেন, তাহলে ইট উইল বি ইউনিক কন্ট্রিবিউশন।

তা ই মাসুম: স্যার মিছিলের ঘটনা একটু বলবেন, আপনার ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে ওদিকে যেতে চাইলেন। তখনকার ঘটনা।আবদুল মতিন: তখন তারা বাঁধা দিচ্ছে। পুলিশ ওই যে তখন গুলি চালাইল? র‌্যান্ডম…। লাঠিচার্জ হইল। ওখান থেকে ধরে ধরে নিয়া তেজগাঁ ওখানে রেখে দিয়ে আসতে লাগল। কিন্তু হাজারে হাজারে… আমরা যখন পরে ধরা পড়লাম ৭ মার্চে। তারপরে তো জেলের মধ্যে গেলাম।

তা ই মাসুম: স্যার, ওই সময়ের ঘটনা ২১শে ফেব্রুয়ারি, লাঠিচার্জ, গুলি, যারা মারা গেলেন, যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হল এগুলো একটু বলবেন?
আব্দুল মতিন: ওই যে, যখন ফার্স্ট স্টেজ শেষ করে পৌঁছালাম তো আমরা মেডিকেলে। এই এই যে, রাস্তাটা এটা আধা মাইল হতে পারে। ইউনিভার্সিটির গেট থেকে এই যে মেডিকেলের গেট। যখন গুলি হইলো, এই যে ২১ ফেব্রুয়ারি ওখান থেকে যখন বের হব।

যখনই সিদ্ধান্ত হয়ে গেল, তারপরে ওই যে সেন্টার থেকে ডাইরেকশন আসতে লাগল। যে, যদি তারা মুভ করে, যদি প্রসিড করে, দেন ওয়ানলি ফায়ার! আর যদি তারা মুভ না করে কিচ্ছু করো না।

তো এখানে ওই যে, ফায়ার! ফায়ার অর্ডার হল। পুলিশরা, হাজারে হাজারে পুলিশ। তখন পুলিশরা গুলি করল। তখন সালাম বরকত (ছবি দেখিয়ে) ওই যে ফাইভ পিপল, দিস ফাইভ পিপল এদের মৃত্যু হইল। মৃত্যু তো আরো হইছে। কিছু কিছু পাওয়া যাচ্ছে। আমরা এইটা কালেক্ট করবো। বিভিন্নভাবে কালেক্ট করে আমরা নাম দিব। এদের খুঁজে বের করা দরকার। কোথায় লস্ট হয়ে গেল, কোথায় গেছে? কারণ আমরা জানি, আজিমপুরে যাদের কবর দেওয়া হয়েছে, দে ওয়্যার সেভেন পিপল।

ওখানকার দারোয়ান বলল, আমরা জানি যে ৭ টা কবর তারা এখানে দিয়েছে, আর্মিরা।

তা ই মাসুম: বাকী ২ জনের নাম তো জানা যায়নি

ভাষা আন্দোলনের পুলিশের গুলিতে ৫ শহীদের ছবি। ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মতিনের ঘরের দেয়ালে সাটানো। উপর থেকে নীচে, ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন, ভাষা শহীদ শফিউর রহমান,ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম, ভাষা শহীদ আবুল বরকত, ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার

আব্দুল মতিন: না, নাম জানা যায়নি। এই অবস্থার মধ্যে কিছুই জানা যায়নি। তাড়াহুড়ার মধ্যে তখন একটা যুদ্ধ, যুদ্ধের মধ্যে কি আর এই সমস্ত জিনিস নেওয়া সম্ভব? তারপরে ওখান থেকে গুলি হইল। গুলির পর কি হইল?

তা ই মাসুম: ২১ ফেব্রুয়ারি গুলিতে শহীদ, ২২ ফেব্রুয়ারি গায়েবানা জানাযা। আপনাদের ওপর হুলিয়া এরপর কী হলো?
আব্দুল মতিন: অ্যারেস্ট হলাম, ৭ তারিখ মানে ৭ মার্চ ১৯৫২।

তা ই মাসুম: ছিলেন কয় দিন জেলে?
আব্দুল মতিন: ছিলাম ১ বছর ২ মাস।

তা ই মাসুম: এরপর বের হয়ে এসে কী করলেন?
আবদুল মতিন: তারপর কিছু করার তো নাই। তারপর রাজনীতিই হয়ে গেছে। আমার ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে গেল। আমি আর কী করব? আমি ওই পার্টি ‘কৃষক ফ্রন্ট’ তার সভাপতি হলাম। পরে মওলনা ভাসানী যখন আসলেন তখন তাকে সভাপতি করে আমি কাজ করতে লাগলাম।

তা ই মাসুম: এটা কোন সালে?
আব্দুল মতিন: ১৯৫৩ সালে।

তা ই মাসুম: এই পার্টি কত দিন করছেন?
আব্দুল মতিন: এটা কৃষক পার্টি প্রায় ৬ বছর।

তা ই মাসুম: এরপর?
আব্দুল মতিন: তারপর পার্টি করতে করতে জেলে গেলাম এরশাদের আমলে।

তা ই মাসুম: এরশাদ আসলেন তো ৮১ তে

আব্দুল মতিন: ওই তো ৮১’র দিকে ও (এরশাদ) আসার পরে ধরে নিয়ে গেলো।

তা ই মাসুম: ৮১তে আসার পর ধরে নিলো?
আব্দুল মতিন: হ্যাঁ, ধরে নিল, ১ বছর ছিলাম।

তা ই মাসুম: এরশাদের সময় কী জন্য ধরে নিয়ে গেলো?
আব্দুল মতিন: ওই তো, বিপদজনক!

তা ই মাসুম: কবে ধরছিলো?

আব্দুল মতিন: ওই প্রথম দিকেই, ওই সময়ই ধরল, বছরখানেক ছিলাম।

এছাড়াও জেলের মধ্যে বছরের পর বছর, আমার তো ১২ বছর জেল হয়ে গেছে। ১২ বছরের চেয়ে বেশি আন্ডারগ্রাউন্ড। এই জীবন। তো সেই যে…

জেলের মধ্যে থাকতাম, অস্থির হয়ে যেতাম তখন, বছরের পর বছর। তখন আমি দেখলাম যে, পুলিশের মাধ্যমে খবর পাঠাতাম তো? তারপরে আমি বললাম যে এই আমার ঠিকানা, এখানে গিয়ে এটা দিবেন। আপনি কিছু মনে করবেন না, আপনি এই বিশটা টাকা রাখেন। তো এই বিশটা টাকা দিতাম, আর সে পৌঁছে দিতো।

তো আমি যে ল্যাংগুয়েজ বের করছিলাম, তার নাম হলো ‘আরবা’। এটা কিন্তু আমি কোনো জায়গায় বলি নাই! হা হা হা। তো ওইটা হলো, আরবি আর বাংলা। আরবা, বুঝলেন?

তা ই মাসুম: জ্বি
আব্দুল মতিন: তো ওইটা ধরা পড়েছিলো, ঢাকা জেলে। এভাবে, এটা কী, এটা কী? কার কাছে? তো সেই পুলিশকে অ্যারেস্ট করা হলো। আমি আমার ওয়াইফকে বলে দিলাম যে, এটা (আরবা ভাষা) অত্যন্ত সহজ! তুমি পারবা। এটা হলো আমাদের অক্ষরগুলো, এগুলো জের জবর পেশ (আরবি ভাষার স্বরবর্ণ ) দিয়া। জের এ কার বা হর্ষিকার, জবর আকার, আর পেশ উ কার, এগুলা দিয়া সহজে পড়তে পারবা এটা।

তা ই মাসুম: আচ্ছা, অক্ষর বাংলা কিন্তু স্বরবর্ণ আরবি?
আব্দুল মতিন: হ্যাঁ, আরবি। তো এটা আমি ওই যে কয়লা, কয়লা জেলে কাগজ দেয় না পেন্সিল দেয় না। তো ওই কয়লা দিয়া দেয়ালের মধ্যে আঁকতাম, লিখতাম। পুরো দেওয়ালটা ভরে ফেললাম। আবার মুছে ফেলতাম, ধুয়ে ফেলতাম। তো এটা ওরা বুঝতে পারতো না। তো এইভাবে ওই আরবা শব্দ তৈরি করেছিলাম।

তা ই মাসুম: ওই সময় কোন দল করতেন?
আব্দুল মতিন: তখন কমিউনিস্ট পার্টিই করি। পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট লীগ, তারপরে বিভিন্ন নাম হতে হতে ভেঙে-চুরে তারমধ্যে আমরা সেটেলই করতে পারছিলাম না। কী ট্র্যাজেডি!

তা ই মাসুম: আর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়?
আব্দুল মতিন: স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুদ্ধ করবো, পার্টি এগ্রি করল না। পার্টি এগ্রি করল না।

তা ই মাসুম: কমিউনিস্ট পার্টি?
আব্দুল মতিন: হ্যাঁ, বলল যে না, এখন এটা করা যাবে না। হটকারিতা হবে।
আর যখন কোনো কিছু না, তখন যুদ্ধ করবে! হঠকারিতা হবে না…হা হা হা..(হাসি দিয়ে) এই হইল ব্যাপার।

তা ই মাসুম: আচ্ছা এরশাদের আমলে জেল থেকে বের হয়ে আসার পর?
আব্দুল মতিন: এই তো জেলে যাওয়া আসা, এই কী জন্য নেয় আর কী জন্য ছাড়ে? এগুলোর তো কোনো ব্যাখ্যা নাই। খুশী মতো।

তা ই মাসুম: এর পরে আপনি কী করলেন, জেল থেকে আসার পর?
আব্দুল মতিন: এই পার্টিই করি। হয় এ পার্টি, না হয় ও পার্টি, না হয় কোনো পার্টিই করিন না। কিছুই করি না। এমনও হয়।

তা ই মাসুম: কোনো চাকরি করলেন না?
আব্দুল মতিন: না।

তা ই মাসুম: চাকরি করলেন না কেন?
আব্দুল মতিন: চাকরি আর কী করবো? এতকিছু কাণ্ড করার পরে আর চাকরি! চাকরি ভেরি মাইনর থিং হয়ে যায়। ভেরি মাইনর থিং। তখন চাকরি করা মানে…, আর একটা জীবন কেটেই গেলো….কতদিন আর? ৮০ পার হইতেছি, হবে।

তা ই মাসুম: ব্যবসায় বাণিজ্যও তো কিছু করলেন না?
আব্দুল মতিন: ব্যাবসা কি জানি নাকি? পুঁজি কোথায়? একটা ঘরই নাই! তারপরে পুঁজি তো দুরের কথা। আমার একটা ঘর আছে নাকি? ঘর নাই। একটা পয়সা নাই।

কেউ আসলে পরে, বলে ভাই শহীদ মিনারে যেতে হবে। বলি যে, ভাই আমাকে নিয়ে যান। রিক্সায় পারেন নেন, আমার আপত্তি নাই, যেটাতে পারেন নেন, আমি এতো হাঁটতে পারব না, পয়সাও নাই। ওরাই দেয়।

তা ই মাসুম: ছাত্র অবস্থায় তো আপনাদের উদ্দেশ্য ছিল মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠা করা। সামনে যে জাতীয় ইস্যু এসেছে সেটার সাথে জড়িত হয়েছেন। সেই সময়ে আপনি- আপনারা যারা ভাষা আন্দোলন করেছেন আপনাদের চাওয়াটা কী ছিল?
আব্দুল মতিন: আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করবো। আমরা যে বাঙালি জাতি এটা আমাদের উপলব্ধি হওয়া দরকার। বোঝেই না! স্বীকারই করে না! বাঙালি না মুসলমান এটাই ঠিক করতে পারে না। আবার যখন বাঙালি হয়, তখন বলে যে হিন্দুরা কি বাঙালি? বলে যে, বাঙালি না কেন?

তা ই মাসুম: ভাষা আন্দোলনে আপনারা চেয়েছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সেই জাতীয়তাবাদ বা জাতীয়তাবাদী শক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছেন। যে রকম দেশ চেয়েছিলেন সেটা কি পেয়েছেন?

আব্দুল মতিন: সেটা হয়নি, সেটা হয়নি। সেই রাষ্ট্রটা তো আমরাও করতে পারি নাই, ওনারা তো করবেই না! এখন তো করতে করতে আমেরিকার-ই হয়ে গেলাম। কী দুর্ভাগ্য আমাদের।

তা ই মাসুম: সেই চেতনার জাতীয়তাবাদী বাংলাদেশের অপূর্ণতা কী কী ? কেন হল না?
আব্দুল মতিন: মানুষ এখনো পর্যন্ত তো, শিক্ষিত লোকই কম। এমনি লেস দ্যান ফিফটি পার্সেন্ট শিক্ষিত। আর যারা শিক্ষিত তারা বোঝে না যে, বাংলা ভাষা কোথা থেকে আসলো? তারা মনে করে যে, আমরা মুসলমান আমাদের আখেরে যেতে হবে, থাকতে হবে। সুতরাং আমাদের ধর্মের ভাষাটাই, ইয়ে তারা। সমস্ত এই যে টুপি পাঞ্জাবি দিয়া সব তবলিগ করে, মাদ্রাসায় পড়ে। পড়ে কী কারণে? অন্যকিছু না। পড়ে কি লাভ হবে?

বাংলা পড়ে কি লাভ হবে? বাংলা তো জানিই! আমার বাংলাতে তো কারো ভুল হয় না! ফকিরেরও ভুল হয় না, মিসিকিনেরও ভুল হয় না। যে জানে না, তারও ভুল হয় না। লোকাল ল্যাংগুয়েজ আছে, সেখানে সবাই কথা বলে। তোমার দেশ কোন জায়গা আমি ভুলে গেছি।

তা ই মাসুম: বরগুনা।
আব্দুল মতিন: বরগুনা, তো সেখানের লোকেরা কথা বলে না? গান গায় না?

তা ই মাসুম: গায়।
আব্দুল মতিন: ভালবাসে না?
তা ই মাসুম: বাসে
আব্দুল মতিন: তারা ছেলেমেয়েদেরকে স্নেহ করে না?
তা ই মাসুম: করে।

সাক্ষাতকার দিচ্ছেন ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মতিন। সাক্ষাতকার গ্রহণ করছেন তারিকুল ইসলাম মাসুম

আব্দুল মতিন: তাহলে, সবাই তো করে। তাহলে, ল্যাংগুয়েজ কি তার নাই? কী করে হয়। মাদার টাং। এটা জন্ম থেকে সে পায়। এবং কোন প্রাণি কথা বলতে পারে? বাঘ, সিংহ, হাতি যেকোন প্রাণি কি কথা বলতে পারে? দে আর পাওয়ার লেস, দে হ্যাভ নো ল্যাংগুয়েজ। এই ল্যাংগুয়েজটা মানুষের জন্য কত বড় সম্পদ! আমি লেখাপড়া জানি না, আমার লেখাপড়া করার দরকার নাই, আমি মাতৃভাষায় কথা বলতে পারি। এটা অসীম ক্ষমতা।

তা ই মাসুম: স্যার আপনি ভাষা আন্দোলন থেকে এই পর্যন্ত ৬০ বছর দেখলেন
আব্দুল মতিন: ভাষা আন্দোলন হইছে ৫২ সাল হইতে ৫৬ বছর।

তা ই মাসুম: ৫২ না তো, ৪৭ থেকেই তো শুরু
আব্দুল মতিন: হ্যাঁ, ৪৭ থেকে।

তা ই মাসুম: ৪৭ এ শুরু আজকে ২০০৮। ৬০ বছর পার হয়ে ৬১ তে। ৬১ বছর পরে আপনার কাছে মনে হয় কি আমরা বাঙালি জাতীয়তাবাদ অর্জন করেছি?
আব্দুল মতিন: হইছি বাঙালি হইছি। উই ক্যান নাউ…‘উই আর নট এসেমড টু রিগার্ড অলস অ্যাজ বেঙলি’। আগে তো লজ্জিত হইত! এটা বহু কষ্টে অ্যাচিভ করেছি আমরা। এখন, ‘উই ফিল উই আর প্রাউড অ্যাজ এ বাঙালি’, এখন বুঝতে শিখেছি। এখন স্বীকার করে হিন্দুদের মধ্যে বাঙালি আর বৌদ্ধ বাঙালি আর খ্রিস্টান বাঙালি। এরা এখন বোঝে ওরাই বাঙালি।

তা ই মাসুম: আপনি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন চান?
আব্দুল মতিন: আমি চাইলেই তো যদি আসে…! তাহলে তো কোন কথা নাই! আমাদের তো চাই, অনেক কিছুই চাই। কিন্তু সেটা তো কিচ্ছুই হচ্ছে না।

প্রথমত: কৃষকদের জমি দিতে হবে। তা না হলে কৃষকরা কিছুই করতে পারবে না। তাদের জমি নাই। আমি তো চাই, এখানে বেশি কিছু না। এখানে সামন্তবাদ তুলে এখানে যদি কৃষকদের জমিটা দেওয়া যায়।

আমরা স্বাধীনতা পাইছি…এটাই তো বড় ব্যাপার পেয়েছি। আর কি চাই? স্বাধীন হয়েছি। আমরা আগে কথাই বলতে পারতাম না! আর এখন আমরা স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করে, স্কুলে যায়, কলেজে যায় এটাতো কম কথা না? আমি লেখা পড়া জানি না, না জানি, আমার ছেলে তো লেখাপড়া জানতেছে। মাই ফাদার ইজ প্রাউড যে, আমার ছেলে লেখা পড়া জানে। এমএ পড়ে, বিএ পড়ে এই যে, আমরা বাহ্যিকভাবেভাবে একটা শিক্ষিত হয়ে গেছি।

প্রকৃতভাবে তো আমরা শিক্ষিত না! হাফ এডুকেটেড! আরো ডেঞ্জারাস! না এদিক, না ওদিক। তো এখন শিক্ষা ব্যবস্থাটা এখন কিভাবে প্রচলিত করতে হবে। আর ওই সমস্ত যে, ইন্ডিয়ার যে নাটক দেখা, গান শোনা এইটা নিয়েই তো সব মুগ্ধ! আমি তো বের হতেই পারি না এখন!

আপনি একটু জিজ্ঞাসা করবেন তো? আমার ওয়াইফদের, আপনারা সন্ধ্যার পরে, খালি হিন্দি নাটক দেখেন, হিন্দি দেখতে থাকেন। রিয়ালি আমি দেখতে পারি না।

কোনো নিউজ শুনবো, সেটাও শুনতে পারি না। আমি কেন তাদের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করব? এটা করা যায়? আমি বাইরে বড় বড় কথা বলব আর এখানে এইটা না। তারা পছন্দ করে দেখে। দুইটা টেলিভিশন আছে। কী করব আমি? হয় না। যদিও…

তা ই মাসুম: এখন এ বিষয়টা তো তাদেরকে বুঝতে হবে, যারা দেখেন? আমি বলে তো পারব না। আপনি যে উদাহরণটা দিলেন এটা সারা দেশের। একই অবস্থা।

ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মতিন (ভাষা মতিন) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে। দেখাচ্ছেন কোথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ভাষা শহীদরা লুটিয়ে পড়েছিলেন।

আব্দুল মতিন: একই অবস্থা!? তাহলে কি হয়, ছেলেমেয়েরা কোথা থেকে বাংলা শিখবে? কোথা থেকে তারা ভাল নাটক দেখবে? এমনি তো কালেভদ্রে জন্মে, হলে পরেই তার অসুখ-বিসুখ হয়ে তারা মারা যায়। শেষ হয়ে যায়।

তা ই মাসুম: স্যার, এই যে শহীদ মিনার, শহীদ মিনার তো আমাদের স্তম্ভ বলা যায় দেশের মানুষের?
আব্দুল মতিন: হ্যাঁ

তা ই মাসুম: জাতীয় স্তম্ভ, এই শহীদ মিনার সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করার জন্য বা এই শহীদ মিনার বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করার জন্য এখানকার সার্বিক ব্যবস্থাপনা দেখে আপনার কী মনে হয়? আরো কী করা উচিৎ? বা কী করা হয়নি?

আব্দুল মতিন: এখানে অসংখ্য কাজ করা যায়, একটা কাজ করা যায়, মানে অনেক জায়গা লাগে, অনেক জায়গা নিতে হয়। এখনো পর্যন্ত এভাবেই চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা পরিকল্পনা আছে শহীদ মিনারটা বড় করে করার। তো সেগুলা হবে- নাকি না হবে, সে সব অনিশ্চিত। রাজনীতির কোনো স্থিরতা নাই, কেবল অস্থিরতা। কোন পার্টি আসবে, কী হবে না হবে? তার মধ্যে মৌলবাদীদের যে তাণ্ডব চলল! এই তাণ্ডবই তো কয় বছর, এখন আওয়ামী লীগ যে কী করবে? যদি একটা স্ট্যাবলিটি আনতে পারে, তাহলে আশা করা যায় যে কিছু করা যাবে। এই অবস্থার মধ্যে চলছে।

তা ই মাসুম: স্যার, এখানকার ভাষা আন্দোলন বা ভাষা আন্দোলনের আগের অবস্থা, শহীদ মিনারে আসার পর কিন্তু কোনো মানুষ জানতে পারছে না, এই শহীদ মিনার আমাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এখানে আসলে যে ইতিহাস, ঐহিত্য বা ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে যে কিছু জানা যাবে সেই ব্যবস্থা তো এখানে নাই?
আব্দুল মতিন: কোনো ব্যবস্থা নাই, ওই অ্যাজ ইট ইজ। এখানে আসে, দেখে যায় এই চলছে। যা ধারণা করে তাই। এই তো, এখানে অনেক মানুষ আসে, বহু জায়গা থেকে দেখতে আসবে, কিন্তু কিছুই দেখতে পাবে না।

তা ই মাসুম: শহীদ মিনারের সিম্বলাইজেশনের জন্য কী করা উচিৎ?
আব্দুল মতিন: অনেক কিছু করা দরকার, অনেক কিছু, এখানে একটা প্রস্রাব করার জায়গা নাই! আশ্চর্য ব্যাপার! তো আমরা এই, হা হা হা, এখানে ওখানে প্রস্রাব করে। মানুষ যাবে কই? এখানে টয়লেট হওয়া দরকার, এখানে রেস্ট হাউজ হওয়া দরকার। এখানে মানুষ একটু বিশ্রাম করবে। এত….পপুলেশনে কি কিছু করা যায়? কানাডা ওই সব দেশে কী পপুলেশন, কত বড় জায়গা।

তা ই মাসুম: শহীদ মিনার কমপ্লেক্স এর কথা বলেছিলেন স্থপতি হামিদুর রহমান সাহেব
আব্দুল মতিন: হ্যাঁ, বলেছিলেন তো, কিন্তু কমপ্লেক্স কোথায়? আমরাই কমপ্লেক্স হয়ে গেলাম! এই। এই ইউনিভার্সিটি, এগুলো কিছু ছিল না তখন। রাষ্ট্র ব্যবস্থা যে, রাষ্ট্রটাই ছিল না তো! এই বহু কষ্টে একটা ভাঙাচোরা ভাবে হয়েছে। দখলের ব্যাপার! মানে জামায়াত-মৌলবাদীরা তারা তো দখল করে নিবে! তারা তো এই চেষ্টা করেছিল। তারা স্বার্থক হইল না। ব্যর্থ হয়ে গেল। আমরা এখন কখন করতে পারব, দাঁড়াতে পারব কিনা? আস্তে আস্তে এগুলো করতে হবে।

তা ই মাসুম: স্যার, ল্যাংগুয়েজ মুভমেন্টের যে অ্যাচিভমেন্ট ইন্টারন্যাশনালি, এই অ্যাচিভমেন্ট কাজে লাগিয়ে কী করা উচিৎ?
আব্দুল মতিন: প্রচুর কাজ করা যায়, প্রচুর। একেবারে এখানে কোনো ইউনিভার্সিটি নাই। কোনো বাইরের লোকেরা এসে রিসার্চ করতে পারে না। রিসার্চ করার তো সব দেশেরই ইচ্ছে? কী করে করবে? কোথায় করবে? কোথায় বসবে? এগুলো দেখতে হবে, জানতে হবে সেগুলো মিউজিয়াম আকারে থাকতে হবে, যা দেখে তারা করতে পারে। এগুলো নাই।

শহীদ মিনারের সামনে বসে কথা বলছেন ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মতিন (ভাষা মতিন)

এটাও (বর্তমান শহীদ মিনার দেখিয়ে) ভেঙে দিলো দ্বিতীয়বার। যা যা হওয়ার কথা কিছু হয়নি। এখন মানুষ আসে, দেখে, এটা প্রস্রাবখানা হয়ে গেছে। ঐখানে প্রস্রাব করে, ঐখানে প্রস্রাব করে, এই। যেমন দেশ! এই রকমই অবস্থা।
মওলানা ভাসানী যখন আসলেন?

তা ই মাসুম: জ্বি।
আব্দুল মতিন: মওলানা ভাসানী যখন আসলেন, তখন উনি একটা টিনের স্যুটকেস, ঐ যে গ্রামে ই টি…করে না? এই রকম টিনের একটা স্যুটকেস এইটা নিয়া প্লেন থেকে নামলেন আসামে। তো উনি বিখ্যাত নেতা, তখন একটা কবিতা লিখেছিলাম-
যেমন দেশ,
তেমন তার স্যুটকেস!
তেমনি তার বেশ!

তখন মাওলানা ভাসানীরে নিয়া হাসতাম, এখন আমরাই হাসির পাত্র! চলছে ঐ ভাবেই, যেরকম রাষ্ট্র, এভাবে চলছে, চলছে না? চলছে তো! এভাবে চলছে। বড় দুঃখজনক এই পরিণতি। এটা লেখা দরকার যে, এরকম একটা রাষ্ট্র, সবচেয়ে বড় একটা অ্যা এ্যাচিভমেন্ট! সেইটা, তারপরে এইটা বাঙালিদের রাষ্ট্র হইলো। অনেককিছু হলো, বাংলা রাষ্ট্রভাষা তারা চেয়েছিলো সেইটা হয়েছে, কিন্তু ভাষা আন্দোলনের কী হচ্ছে, এই অ্যাচিভমেন্টের ইতিহাসটা কোথায়? এটাতো সাধারণ মানুষও আছে এখানে প্রচুর, তারা কি করবে? এখানে এসে যত সব খ্যাপাই, এখানে এসে সবাই প্রতিবাদ জানায়।

তা ই মাসুম: প্রতিবাদের জায়গাটা আছে। তাই তো, ওর পর থেকে তো সব প্রতিবাদের জায়গাই তো এটা
আব্দুল মতিন: এটা। এটাই প্রতিবাদের জায়গা। এগুলো তো এখন একটু পরিস্কার করা হলো, (২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে) এই তো ধোয়া-টোয়া হচ্ছে। এটা তো নোংরা, একটা ডাস্টবিন! আপনাদের যে, আমাদের দেশে যে এ্যাডমিনেস্ট্রেশন নাই! তার একটা সবচাইতে ল্যারিং এক্সাম্পল হইল এই, দিস ইজ দ্য হাইয়েস্ট অ্যাচিভমেন্ট!

এই জায়গা সেখানে আমরা এই আধঘণ্টা কাটিয়ে আসলাম। কী দেখলাম! এখানে, ময়লা, খোলামেলাভাবে, তারপরে এখানে কিছু নাই। এখানে কী না হতে পারে? একটা ইনকামিং সোর্স হতে পারে। এর জন্য একটা ডিপার্টমেন্ট খুলে দিতে পারে। ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন তদারক’, তা নাই! এটা সমালোচনা হিসেবে রাখা দরকার।

তারপরে আমি তো আর একটা ফেলনা লোকও না? আমি ভাষা আন্দোলন এটা করলাম, এটা না করলে ওই ভাবে, কেউ যদি না করতাম তাহলে এটা হতো না। হতোই না।

চলবে…