আরিফিন শুভর ‘একটি সিনেমার গল্প’ মুক্তি পেয়েছে গত এপ্রিলে। নায়ক আলমগীর পরিচালিত ও প্রযোজিত ওই ছবিটি সেভাবে সাফল্য পায়নি। এরপর থেকেই এই নায়ক রয়েছেন কিছুটা আড়ালে। সবাই শুভকে জিজ্ঞেস করছেন, কেন তার এই নিরবতা!
এবার ঢাকাই সিনেমার এই তারকা নায়ক নিজেই জানালেন তার নিরবতার কারণ। জানালেন, তিনি নিজের একটি দর্শনে বিশ্বাস করেন। বলেন, আমি যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে কারও দাস না হতে পারি, তবে কারও বিশ্বাসের দাস কীভাবে হবো? আমার নিজের একটা বিশ্বাস রয়েছে। তাই আমি অন্যের বিশ্বাসের দাস হতে চাই না। আমি আমার মতো করে নিজের জীবনকে সাজাবো। এগিয়ে নিয়ে যাবো। যারা যার বিশ্বাস তার কাছে।
ফেসবুক লাইভে এসে শুভ মঙ্গলবার দুপুরে আরো বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে একটি রীতি রয়েছে। সেই ট্রেন বা গাড়িতে তিনি উঠতে পারেননি বলেই, তাকে নিয়ে অনেকের অভিযোগ। অনেকেই শুভকে নাকি বলেন, কেন তিনি নিজের প্রমোশন করেন না! শুভ এই প্রমোশনকে বিশ্বাস করেন না। তিনি মনে করেন, আকাশে চাঁদ উঠলেই দেখা যায়। কাউকে বলে দিতে হয়না দেখো আকাশে চাঁদ উঠেছে। শুভ বলেন, হতে পারে এগুলো আমার ভালো দিক কিংবা খারাপ দিক।
আরিফিন শুভ বলেন, আমি চাইবো যেন হাজারবার ফেল করি। ফেল করলে নতুন কিছু করার চেষ্টা থাকে। জীবনে পুরাতন জিনিস বারবার করতে চাইনা। আমি নতুন কিছু করতে চাই। নিজেকে এক্সপ্লোর করতে চাই। একজন শিল্পী হিসেবে আমার কাজ চেষ্টা করে যাওয়া। সফলতার পিছনে কখনো দৌড়ায়নি আর দৌড়াবোও না। সাফল্য অনেকবেশি পিচ্ছিল। তাই আমি সবসময় বিশ্বাসের পিছনে দৌড়াই। এটা আমি করে যাবো। যে যাই বলুক আমি আমার মতো করবো।
‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ছবির এই নায়ক বলেন, প্রতিদিন শুটিংয়ের ছবি ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশের পক্ষে আমি নই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের কাজ যখন নির্মাণাধীন থাকে তখন খুব বেশি সেগুলো দেখা যায় না। যতদিন না পর্যন্ত ফার্স্টলুক বা টিজার না আসে। শুভ জানান, তাকে তার ভক্তরা অনেকদিন ধরে বলছেন তারা কেন নতুন কিছু পাচ্ছেন না। আদৌ কাজ করছি কিনা তারা সন্দেহে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি আমার মতো চুপচাপ করে কাজ করি। মন প্রাণ থেকে বিশ্বাস করি যে, আমি ধোকা দিলে দর্শকরাও আমাকে ধোকা দেবে। আমি যদি শর্টকাটে করে ফেলি, দর্শকরাও শর্টকাটে বেরিয়ে যাবে। তাই আমি দর্শকদের ধোকা না দেওয়ার চেষ্টা করছি।
শুভ এখন কাজ করছেন ‘জ্যাম’ ছবিতে। শেষ করেছেন ‘সাপলুডু’ ছবির কাজ। কদিন আগে চুক্তি হয়েছেন ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবিতে। শুভ বললেন, ‘জ্যাম’ কেমন হবে জানিনা। গভীর ক্রাইসিসের গল্প। তবে ‘সাপলুডু’ একদম অন্য ধাঁচের একটা ছবি। থ্রিলার, সাসপেন্স, অল্প অল্প অ্যাকশন সবকিছু রয়েছে। ‘মিশন এক্সট্রিম’ ঢাকা অ্যাটাকের সাফল্যের কারণে তৈরি হচ্ছে না। ‘ঢাকা অ্যাটাক’ যে প্যাশন থেকে তৈরি করা হয়েছিল, ‘মিশন এক্সট্রিম’ একই প্যাশন থেকে নির্মাণ করা হচ্ছে। আমি সিক্যুয়ালের কোনো ছবিতে কাজ করিনি। এটাও ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর সিক্যুয়াল নয়। কিন্তু প্ল্যাটফর্মটা একই।
‘ছবি হিট মানেই সবকিছুই হিট আমি এটা বিশ্বাস করিনা। পর্দায় আমি নিজেকে শতভাগ দেখতে পারলেই হিট মনে করি। ছবির ভবিষ্যৎ কেউ বলতে পারে না। আগামীতে যে ছবিগুলো আসছে সবগুলো নিয়ে আমি সমানভাবে খুশি থাকতে চাই। কোনোটা আকাশচুম্বী প্রত্যাশা আবার কোনোটা কম প্রত্যাশা রাখতে চাইনা। আমি আমার বিশ্বাসের সঙ্গে থাকবো। সফলতা বা বিফলতা ব্যাপার না। আমি আমার জার্নিটা চালু রাখবো। মাঝেমধ্যে একটু ডুব দেব।’
সবশেষে শুভ জানান, তিনি শিগগির দেশের বাইরে ট্রেনিং-এ অংশ নিতে যাবে। উদ্দেশ্য ‘মিশন এক্সট্রিম’। এরপর দেশের বাইরের লোকাল প্রডাকশনের ছবিতে কাজ করবো। অনেক বড় ব্যানারে কাজ করবো। একটা ঐতিহাসিক গল্পে কাজ করবো। আপাতত গোপন রাখতে চাই। সারপ্রাইজ আরও বাকি রয়েছে।