ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে নির্ধারিত সময়ে ডিন নির্বাচন না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত ডিনের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে অন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ-১৯৭৩ এর লঙ্ঘন এবং অনুষদের ‘ঐতিহ্য’ ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভুঁইয়া।
ব্যক্তিগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আক্রোশের শিকার হয়েছেন কিনা সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন প্রশ্ন তোলেন।
নির্বাচিত ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ডিন হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবসরকালীন ছুটিতে যাওয়ায় গত ২ জুলাই অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়াকে ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে নিয়োগ দেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। নিয়োগপত্রে বলা হয়, ০২.০৭.১০১৭ তারিখ হতে অনধিক ৯০ দিন অথবা পরবর্তী নির্বাচিত ডিন কাজে যোগদান না করা পর্যন্ত (যা আগে ঘটবে তা কার্যকর হবে) সময়ের জন্য উপাচার্য আপনাকে ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
কিন্তু ৯০ দিন পূর্ণ হওয়ার আগেই ডিন নির্বাচন না দিয়ে গত বুধবার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে নতুন ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে নিয়োগ দেয় বর্তমান প্রশাসন।এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঐতিহ্য ও প্রচলিত রেওয়াজ পরিপন্থী এবং অধ্যাদেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিযোগ অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়ার।
ভর্তি পরীক্ষাকে আশঙ্কামুক্ত করার জন্য অনুষদের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুষদের বিভিন্ন পরীক্ষা সংক্রান্ত জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ সংবাদপত্রে ছাপা হওয়ায় তাকে অনুষদ থেকে বদলি করার জন্য উপাচার্যকে চিঠি দিলেও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
‘‘আমাকে এমন এক সময় সরানো হল যখন আমি ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছি।’’ বলেন টিভি, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের এ অধ্যাপক।
ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে নিয়োগের পর নির্ধারিত ৯০ দিন পার হওয়ার পরেও পরবর্তী নির্বাচিত ডিন দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে গেছেন এমন পাঁচ জন সাবেক ডিনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই যখন অনুষদের ঐতিহ্য তখন আমাকে কেন নির্বাচন না দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হল? তাহলে আমি কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আক্রোশের শিকার?’
এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়া বলেন: নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদেশের লঙ্ঘন হয়েছে। আর নির্বাচিত ডিন দায়িত্ব নেওয়ার আগে নতুন কাউকে ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও রেওয়াজের পরিপন্থী।
তবে ‘ডিন হিসেবে থেকে যাওয়ার জন্য নয়, বরং কীভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘিত হচ্ছে তা জাতির সামনে তুলে ধরাই উদ্দেশ্য’ বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়া।