২০১২ সালের ৪ এপ্রিল শ্রমিক অধিকার কর্মী আমিনুল ইসলামের অপহরণ, অত্যাচার ও হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন এখনো সম্ভব হয়নি। যদিও সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে ছিলো দেশের কিছু কর্মকর্তার নামও। এই বিচারহীনতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা এবং বিশ্ব ব্র্যান্ডগুলোকে বাংলাদেশকে আমিনুলনের মৃত্যুর সঠিক সুরাহা করারও তাগিদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এই সংগঠনটি।
দীর্ঘ পাঁচ বছরেও আমিনুলের পরিবার বা সাধারণ মানুষ জানতে পারেনি যে তার সঙ্গে আসলে কি হয়েছিলো বা কে তাকে মেরেছিলো। মানবাধিকার সংস্থার এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘ব্যক্তিগত বিতর্কের জেড়েই তার মৃত্যু হয়েছে’ এমনটা বলেই পুরো ঘটনা থেকেই তাদের হাত গুটিয়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি এটার সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংযোগের কথা উঠার পরও তা নিয়ে তেমন অনুসন্ধান চলেনি।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ আসার পর বাংলাদেশ এই বিষয় নিয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান শুরু করে। কিন্তু এই পাঁচ বছরে পুলিশ যা করেছে তা হলো, শুধু এক নিখোঁজ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। তার হত্যার সঙ্গে যে কোনো নিরাপত্তাবাহিনীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে সেই বিষয়েও চলেনি কোনো অনুসন্ধান।
আমিনুল ইসলাম ছিলেন স্থানীয় বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির (বিসিডব্লিউএস) ট্রেড ইউনিয়নের সংগঠক। এই সংগঠনটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি ও সামুদ্রিক খাবারের ফ্যাক্টরিতে কর্মরত শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে। ২০১২ সালে ৪ এপ্রিল তিনি নিখোঁজ হন। এর দুই দিন পর সর্বশেষ তার দেখা পাওয়ার স্থান থেকে ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহে নির্যাতনের চিহ্নও ছিলো। তখনই উঠে আসে এর সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর জড়িত থাকার অভিযোগ।
বিসিডব্লিউএসের একজন শ্রমিক সংগঠক থাকা অবস্থায় মাঝে মাঝেই বিভিন্ন গার্মেন্টের ম্যানেজারদের সঙ্গে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো আমিনুলের। নিখোঁজ হওয়ার আগে তিনি ঘন ঘন হুমকি পাওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন।