দেশের সব সেক্টরের অধিকাংশ তারকা অতিথি হিসেবে এসেছেন শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ‘৩০০ সেকেন্ড’ শো-তে। উপস্থাপক হিসেবে এটি জয়ের একটি সাফল্য। কিন্তু তারপরেও জনপ্রিয় এই উপস্থাপকের আছে একটি আক্ষেপ!
তিনি তার কোনো শো-তে অতিথি হিসেবে আনতে পারেননি সিনেমা ও ক্রিকেটের দুই ‘মহাতারকা’ শাকিব খান ও সাকিব আল হাসানকে।
সোমবার বিকেলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জয় বলেন, ‘আমার শো-তে শাকিব খান ও সাকিব আল হাসানকে চাই।’
“বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ সেলিব্রেটিদের আমার শো-তে পেয়েছি। মিডিয়ার বাইরে দেশের বড় বড় বিজনেস আইকনরা এসেছেন। ম্যাক্সিমাম মন্ত্রী এসেছেন। সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন স্যার এসেছেন। শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সাঈদ স্যারকে পেয়েছি। শামীম ওসমানের মতো রাজনীতিবিদকে পেয়েছি। কিন্তু শাকিব ও সাকিব আল হাসানকে আমি অতিথি হিসেবে পাইনি।”
সিনেমার ‘নাম্বার ওয়ান’ তারকা শাকিব খান ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ‘অথিতি হিসেবে চেয়েও পাননি’ উল্লেখ করে নিজের যুক্তি দেখালেন শাহরিয়ার নাজিম জয়।
বললেন, ‘টিভি অনুষ্ঠানে যে বাজেট থাকে তাদের (শাকিব-সাকিব) মতো কমার্শিয়াল সেলিব্রেটিদের ইন্টার্ভিউ নেয়াটাও বড় বাজেটের ব্যাপার। তারা এত কম পারিশ্রমিকে কেন আমার শো-তে আসবেন? যদি বড় বাজেট পাই, তবে অবশ্যই শাকিব খান ও সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আসবো। সেটি হবে আমার অর্জন।’
ইমপ্রেস টেলিফিল্ম ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরের পরিকল্পনায় ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর শুরু হয়েছিল ‘৩০০ সেকেন্ড’। সেহাঙ্গল বিপ্লবের প্রযোজনায় ও শাহরিয়ার নাজিম জয়ের চতুর উপস্থাপনায় অল্পদিনের মধ্যে শোটি আলোচনায় চলে আসে। সপ্তাহে সাতদিন প্রচারিত হওয়া ‘৩০০ সেকেন্ড’-এর এই শো-টি ৮০০ পর্বে পৌঁছেছে।
‘৩০০ সেকেন্ড’ মূলত পাঁচ মিনিটের টক শো। দেশে এমন কনসেপ্টে প্রথমবার কোনো টিভি শো হয়েছে। জয় মনে করেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই কনসেপ্ট জনপ্রিয় হলেও ব্যাপক সমাদৃত নয়।’ তিনি বলেন, ‘ফরিদুর রেজা সাগর ভাইয়ের বুদ্ধিতে এই কনসেপ্টে কাজ করি। যদি শো’টি ফ্লপ যেত তবে বড় ধরনের চাপে পড়তে পারতাম। পাঁচ মিনিটের ৮০০ পর্বের শো-এর মধ্যে কমপক্ষে ২০০টি পর্ব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। মানুষের এই ব্যস্ত সময়ে ৪০ মিনিটের শো-এর আউটপুট ৫ মিনিটে দিয়েছি। আমি মনে করি, এটি বিশাল প্রাপ্তি। কাজটি শুরুর করার সময় অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু করেছিলাম।’
জয় বলেন, চ্যানেল আইয়ের মতো টিভি চ্যানেলে যে কটি অনুষ্ঠান দর্শক ভীষণ পছন্দ করেন, তার অন্যতম হচ্ছে ‘৩০০ সেকেন্ড’। এটি সম্ভব হচ্ছে সাগর ভাইয়ের তদারকির জন্য। কারণ, তিনি সুস্থ থাকাকালীন শো-টির সার্বিক মনিটরিং ও আমাকে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন।
জয় বলেন, চ্যানেল আইয়ের আরেকটি টক-শো আছে ‘তৃতীয় মাত্রা’, যেটির প্রচার কয়েক হাজার পর্ব ছাড়িয়েছে। চ্যানেল আই এসব রেকর্ড তৈরি করে। একইভাবে ‘৩০০ সেকেন্ড’ শো-টি জনপ্রিয়তার সঙ্গে এমন অবস্থানে পৌঁছাবে যে দেশের অন্য কোনো শো সেই রেকর্ড ভাঙতে পারবে না, এটি আমি সবসময় চাই এবং সেই উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
এর আগে ‘সেন্স অব হিউমার’ শো-এর মাধ্যমে উপস্থাপক হিসেবে আলোচিত হয়েছিলেন জয়। জুটিয়েছিল কিছু সমালোচনাও।
তবে জয় অকপটে স্বীকার করলেন, উপস্থাপক হিসেবে ‘৩০০ সেকেন্ড’ শো-টি তাকে স্থিতিশীল অবস্থান দিয়েছে। সে কারণে তিনি চান না, ‘৩০০ সেকেন্ড’-এর প্রতি পর্ব ভাইরাল হোক। জয় বলেন, ‘৩০০ সেকেন্ড’ আমার একটি আইডেন্টিটি। যারা কাজ করে তারা ভালোভাবেই জানে প্রতিযোগিতার এই সময় আইডেন্টিটি তৈরি করা কতটা কঠিন!
পাশাপাশি এই শো-এর সঙ্গে জয় জানালেন, তার পারিবারিক আবেগ মিশে আছে। বলেন, ‘আমার বাবা বেঁচে নেই। তিনি যখন বেঁচে ছিলেন টিভি থেকে এই অনুষ্ঠানটি দেখে রাতে খেতে যেতেন। তাই এই অনুষ্ঠানের প্রতি আমার সবসময় অন্যরকম আবেগ মিশে থাকবে। যত কাজই করি না কেন আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে ৩০০ সেকেন্ড-এর প্রতি, কীভাবে আরও ভালো করা যায়!’