টিভি পর্দার শীর্ষ অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। বরাবরের মতো এবারও ঈদে তার কাজগুলো দিয়ে আলোচিত হয়েছেন। গত কয়েকবছর ধরে জনপ্রিয় এ অভিনেতা ক্যারিয়ার নিয়ে সাফল্যের জোয়ারে ভাসছেন! সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অপূর্ব নিজেকেই ছাড়িয়ে যাচ্ছেন।
ঈদ মৌসুম শেষ না হতেই আবারও কাজ শুরু করেছেন অপূর্ব। শুটিংয়ের ফাঁকেই চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে কথা বলেন তিনি। যার গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ থাকলো পাঠকদের জন্য…
ঈদ কাটালেন কীভাবে?
এবার ঈদে কিচ্ছু করি নাই। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত শুটিং করেছি। একটি কাজ বাকি ছিল বলে ঈদের পরদিন শুটিং করে শেষ করেছি। তবে প্যান্ডামিকের জন্য এবারের ঈদটা ছোটবেলার শুক্রবার স্কুল ছুটির দিনের চেয়ে কম আনন্দে গেছে। একটা জিনিস বেশি মনে হয়েছে, এই খারাপ অবস্থার মধ্যেও আল্লাহ আমাকে ভালো রেখেছেন, পরিবার-পরিজন আশপাশের মানুষদের সুস্থ ও ভালো রেখেছেন এতেই আলহামদুলিল্লাহ্।
ঈদে প্রচারিত আপনার অভিনীত নাটকগুলোর যদি মূল্যয়ন জানতে চাই?
আমার কাছে আমার প্রত্যেকটা নাটকই সেরা। নাটকে আমার যে চরিত্রটা থাকে সেটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেস্ট দেয়ার চেষ্টা করি। আলাদাভাবে মূল্যায়ন করতে পারবো না। কারণ, প্রতিটি কাজই আমার। সেখানে আমার ভালোবাসা, অনুভূতি মিশে থাকে। প্রত্যেকটা কাজই ভালোবেসে করেছি। কিন্তু মানুষের পছন্দের টেস্ট একেক ধরনের। তাদের বিভিন্ন ধরনের কাজ দেয়া হয়েছে। তারা নিজেদের পছন্দমতো কাজগুলো বেঁছে নিয়েছে। তাই কোনটা ভালো কোনটা মন্দ এটা নির্ধারণ করতে পারবে দর্শক। আবারও বলছি, আমার সবগুলো কাজে সমান ডেডিকেশন থাকে।
নিজের কাজের বাইরে সহকর্মীদের কাজগুলো দেখেছেন? ওভারঅল কাজগুলো নিয়ে কেমন লেগেছে?
হ্যাঁ আমি যতদূর সম্ভব অন্যদের কাজ দেখার চেষ্টা করি। তবে এবার খুব বেশি কাজ দেখা হয়নি। তাই ওভারঅল মূল্যায়ন করা কঠিন। তবে কিছু ট্রেলার, পোস্টার দেখে মনে হয়েছে, সবার লক্ষ্য ছিল ভালো কাজ করা। সবার যে ভালো কাজের চেষ্টা ছিল সেটা আমার কাছে খুব পজিটিভ মনে হয়েছে। দর্শকরাও আলোচনা করছে, সমালোচনা করছে; এতে নাটক নিয়ে আগ্রহটা প্রকাশ পাচ্ছে। এটাও ভীষণ ইতিবাচক দিক।
ঈদে প্রচারিত আপনার অনেক নাটকের ভিড়ে ‘ব্রেকিং নিউজ’ নাটকে সাংবাদিক চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। বেশ সাবলীল ছিলেন। এ কাজটি করে কেমন লেগেছে? এ কাজটি করতে গিয়ে এদেশের একজন সাংবাদিকের কাজের সীমাবদ্ধতাগুলো কী বলে মনে হয়েছে আপনার ?
চরিত্রটি ঘটিয়েছেন চিত্রনাট্যকার, রাজীব আহমেদ। তিনি নিজেও একজন সংবাদকর্মী। আমি স্ক্রিনে যতটা বেটার করা যায় চেষ্টা করেছি। একজন মফঃস্বল সাংবাদিক কেমন হতে পারে সেটা ভেবে অভিনয় করেছি। আমি যেহেতু ওই সেক্টরের না তাই সেখানার লিমিটেশন হয়তো কিছু বলতে পারবো না। সবকিছু নাটকে তুলে আনা সম্ভবও হয়নি। চিত্রনাট্যকার নিজে সাংবাদিক বলে উনি কিছু কিছু দিক তুলে ধরেছেন। চরিত্রটিতে সাত্তার আলীকে দিয়ে স্ক্রিনে যা তুলে ধরা হয়েছে হয়তো অনেকের সঙ্গে এসব নাও ঘটতে পারে।
সিনেমায় এখন স্টার মুখের চেয়ে গল্প নির্ভর কাজের জয়জয়কার। নাটকও সেদিকে টার্ন নিচ্ছে, এমনটা মনে হয় আপনার?
সবসময় গল্প হচ্ছে মেইন হিরো। আর ভালো গল্প হচ্ছে সুপারহিরো। কিছু সময়ে ট্রেন্ড বা হাইপ আসে তাই বলে ভালো গল্পের ডিমান্ড কখনই কমে না এবং জীবনে কখনো কমবেও না। ভালো বেশ কিছু ধরনের হয়। যেমন- মানুষ সেই গল্পে নিজের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছে, একটা কিছু অনুধাবন করেছে, আনন্দ পেয়ে পছন্দে হেসেছে, শিখতে পেরেছে, ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে। ভালো গল্পের চাহিদা আগেও ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। প্রশ্ন আসে, ভালো নাটকের ভিউস কম হয় কেন? আমার মনে হয়, ঈদের সময় খুব সিরিয়াস বা সাহিত্য নির্ভর কাজগুলোর ভিউস হয় না। আবার প্রচারটাও একটা ফ্যাক্ট। কোথায় চলবে, কোন টাইমে চলবে। আমার মনে আছে, ছোটবেলায় হুমায়ূন আহমেদ স্যারের নাটক কোনদিন কোন সময়ে চলবে খাতায় লিখে রাখা হতো। তার নাটক মানেই ছিল উৎসব।
নাটকের ভিউস নিয়ে যখন কথা উঠল সেই প্রসঙ্গে জানতে চাই, নাটক কী এখন ভিউস আসলেই ফ্যাক্ট?
অবশ্যই নাটকে ভিউস একটা ফ্যাক্ট। এই ইন্টার্ভিউটা যত বেশি পাঠক পড়বে আপনার ভালো লাগবে। যেখানে প্রকাশ হচ্ছে সেখানকার কর্তৃপক্ষের ভালো লাগবে। নিউজ সর্বাধিক পঠিত লিস্টে উঠলে আমার আপনার সবার ভালো লাগবে। কেউ ফেসবুকে পোস্ট দিলে সেখানে লাইকস, কমেন্টস বেশি হলে তার ভালো লাগবে। ঠিক তেমনই একটা নাটক যতবেশি দেখবে, ততবেশি ভিউস হবে। সেই কাজ সংশ্লিষ্ট সকলের ভালো লাগবে। তবে সর্বাধিক পঠিত বা সবচেয়ে ভিউ হলেই নাটক ভালো এটা বিচাদের মানদণ্ড না।