‘আমি ক্যারিয়ারের শেষের দিকে। না আমি শচীন টেন্ডুলকার, না গ্লেন ম্যাকগ্রা। আমার কথা মানুষ কেন মনে রাখবে? ’
প্রশ্নটা ছিল নির্বাচন ও এরপরে জনগণের কল্যাণ আর রাজনীতি নিয়ে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার কী ভাবনা? জবাবে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলপতির বক্তব্য রীতিমত চমক জাগানিয়া!
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লিগের হয়ে নৌকা মার্কায় নড়াইল-২ আসন থেকে নির্বাচন করবেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এর আগে ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সম্ভবত শেষবারের মতো দেশের মাটিতে টুর্নামেন্ট খেলতে নামবেন ম্যাশ। সিরিজ চলাকালীন সময়ে যেন নির্বাচন প্রসঙ্গে আর কোনো প্রশ্ন না ওঠে সেজন্য নিজ উদ্যোগে আগেভাগে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন টাইগার ওয়ানডে দলপতি।
আগেই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা ছিল মাশরাফীর। সেই সংবাদ সম্মেলনে আবারও জানলেন যে তার নির্বাচন প্রসঙ্গে এখন দ্বিধা-বিভক্ত বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা। তাই আসার আগেই উত্তরটা সাজিয়ে এনেছিলেন। রাজনীতি প্রসঙ্গ আসতেই ছাড়লেন ইয়র্কার!
‘আমার ক্যারিয়ার অবশ্যই শেষের দিকে। আমি না শচীন টেন্ডুলকার বা না গ্লেন ম্যাকগ্রা; যে মানুষ আমাকে স্মরণ রাখবে। আমি আমার মতো করেই ক্রিকেটটা খেলেছি, আমার মতো লড়াই করে যতটুকু পেরেছি খেলেছি। তবে সব সময় উপভোগ করেছি মানুষের জন্য কাজ করতে পারা। এটা আমার একটা ছোটবেলার শখ ছিল, ছোটবেলার চাওয়া-পাওয়া ছিল। সুযোগটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছেন, বৃহৎ পরিসরে যদি কিছু করা যায়।’
কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমি মানুষের ভালোবাসা ছেড়ে কেন মাশরাফী একটি নির্দিষ্ট দলের প্রতিনিধি? এমন প্রশ্নও এখন তেড়ে আসছে মাশরাফীর দিকে। শ্রদ্ধার আসন ছেড়ে অনেকের কাছে এখন সমালোচনার পাত্র। কেমন লাগছে মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখতে?
মাশরাফী স্বাভাবিকভাবেই জবাব দিলেন, ‘আমি সবসময় বিশ্বাস করি প্রত্যেকের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব থাকা উচিত। আপনি যদি কোনো দলকে সমর্থন করেন অবশ্যই সেটা প্রকাশ্যে বলা উচিত। অনেকেই আছে সমর্থন করে, বলতে পারে না। যে বা যারা মন্তব্য করছে তার নিয়ন্ত্রণ তো আমার হাতে নেই। তবে তাদের প্রতি অবশ্যই আমার শ্রদ্ধা আছে।’
কেন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এমন প্রশ্নে ম্যাশের সোজাসাপ্টা জবাব, ‘উদ্দেশ্য আমার পরিষ্কার। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সেই সুযোগটা পেলে অবশ্যই আমি কাজ করবো। আগেও বললাম আমি বিশ্বক্রিকেটে এমন কোনো মহাতারকা না যে আট মাস পর যখন আমি খেলা ছেড়ে দেব তখন জনে-জনে মানুষ আমাকে স্মরণ করবে।’
নিজেকে এখনই নির্বাচিত ভাবছেন না মাশরাফী। নারাজ বড় রকমের রাজনীতিবিদও ভাবতে। সামনে কী ঘটবে সেটা নিয়েও কল্পনা করছেন না। যদি সাংসদ নির্বাচিত হয়েই যান তাহলে ভবিষ্যতে তার কথার সঙ্গে কাজকে মিলিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।