রাষ্ট্রের কাছে ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠানই বড় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা আবেদন) এর দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
রিভিউ শুনানিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল প্রধান বিচারপতি সহ আপিল বেঞ্চের বিচারপতিদের সম্পর্কে বলেন, ‘ আপনারা যেদিন থাকবেন না আপনাদের খুব ‘ফিল’ করবো। তখন প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ শুনুন মি: অ্যাটর্নি জেনারেল; রাষ্ট্রের কাছে ব্যক্তি নয়, প্রতিষ্ঠান বড়। আমরা যেদিন থাকব না সেদিনও রাষ্ট্র চলবে, দেশ চলবে।’
সোমবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি শুরু করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে রোববার সাঈদীর পক্ষে রিভিউ শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। পরে আদালত শুনানি মুলতবি করে পরবর্তী শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।
গত ৬ এপ্রিল সাঈদীর আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মে রিভিউ শুনানির দিন ধার্য করেন আপিল বেঞ্চ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেছিলেন সাঈদীর আইনজীবীরা।
আর একই বছরের ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনে সাঈদীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির রায় পুনর্বহাল চাওয়া হয়।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।পরে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী আপিল করেন। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর ফাঁসির সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
সে আদেশের বিরুদ্ধে পরে রিভিউ করেন সাঈদী ও রাষ্ট্রপক্ষ। রিভিউ আবেদনে সাঈদীর পক্ষ থেকে খালাস চাওয়া হয় আর রাষ্ট্র পক্ষ চান মৃত্যুদণ্ড।