চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আমরা আশা হারাইনি

জাতি হিসেবে বাঙালির কলঙ্কমুক্তিতে আশাজাগানিয়া এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সাময়িকী পলিটিকো। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সাময়িকীটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দেশটির বিচার বিভাগ; দীর্ঘ বছর পর সেই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে পলিটিকো আরও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার গত ১৭ জুন ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের কাছে রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় মামলার নথি তলব করেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় প্রাণদণ্ড পাওয়া এই খুনি যুক্তরাষ্ট্রে তার রাজনৈতিক আশ্রয় হারাবে। পাশাপাশি তাকে বাংলাদেশেও ফেরত পাঠানো হতে পারে।

ন্যায় বিচার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিঃসন্দেহে এ এক বড় অগ্রগতি। আমরা জানি, বেশ কয়েক বছর ধরেই খুনি রাশেদ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক পর্যায়ে নানান তৎপরতা চলছে। একাধিক লবিস্টও নিয়োগ করা হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি লিখেছেন। এ কারণেই ট্রাম্প প্রশাসন বেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছিল বিষয়টি।

বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে উচ্চ আদালতে যে ১২ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তার ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ৬ জনের সাজা কার্যকর করতে পেরেছে সরকার। এক খুনি (আজিজ পাশা) পলাতক অবস্থায় মারা গেছে। বাকি ৫ জনের একজন এই রাশেদ চৌধুরী। আরেক খুনি নূর চৌধুরী পালিয়ে আছে কানাডায়। কিন্তু বাকি তিন খুনি শরিফুল হক ডালিম, খন্দকার আবদুর রশীদ ও রিসালদার মুসলেম উদ্দিনের অবস্থান জানে না সরকার।

এসব খুনিরা যেখানেই থাকুক না কেন, যে কোনোভাবেই হোক- দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করতেই হবে। এটা ঠিক দেশি-বিদেশি দোসরদের মদদে এখনো তারা প্রচণ্ড প্রভাবশালী। আর এ কারণেই দীর্ঘ ৪৫ বছরেও তাদেরকে শাস্তির মুখোমুখি করা সম্ভব হয়নি। জাতি হিসেবে এটা আমাদের কাছে দুঃখজনক, লজ্জাজনক।

তবে আমরা আশা হারাইনি। একদিন এ দেশের মাটিতেই এই খুনিদের সাজা কার্যকর করা হবে। জাতির পিতার রক্তের দাম শোধ করে কলঙ্কমুক্ত হবে জাতি। এটাই আমাদের প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা।