চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আমরা অন্য দেশের উৎসব ভিক্ষা করে পালন করছি: সোহেল রানা

শক্তিমান অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক সোহেল রানা বলতে গেলে এখন চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে একেবারেই দূরে রয়েছেন। তবে দূরে থাকলেও ইন্ডাস্ট্রির মানুষগুলোকে ভুলে যাননি। তাদের বিপদে-অাপদে সবসময় বন্ধুর মতো পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন তিনি। এসব কিছুর মধ্যেও বর্তমানে চলচ্চিত্র নিয়ে তার অনেকটা আক্ষেপ রয়েছে। সোহেল রানার মতে, এখন যেসব চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে সেগুলো আসলে চলচ্চিত্র নয়।

চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে সিনেমায় মার্শাল আর্টের প্রবর্তক সোহেল রানা চলচ্চিত্র নিয়ে তার অভিমানের কথা জানান।

‘এপার ওপার’ খ্যাত এ অভিনেতা বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশে কোনো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে না। যে সিনেমাগুলোকে বলা হচ্ছে ভালো সিনেমা সেগুলোর বেশিরভাগ যৌথ প্রযোজনার। এসব যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলো সরকারি কোনো নীতিমালা মানছে না। নীতিমালা যদি না মেনেই থাকে তাহলে এটি যৌথ প্রযোজনার ছবি নয়  এবং বাংলাদেশি ছবিও নয়। তাহলে সেই ছবিগুলো নিয়ে আমাদের হৈ চৈ মাতামাতি করার কোনো প্রয়োজন নেই।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া ‘ওরা এগারো জন’ সিনেমার প্রযোজক সোহেল রানা বলেন, ‘মা যদি তার সন্তানকে খুন করতে চায়, তাহলে সেই সন্তান বাঁচিয়ে রাখার ক্ষমতা পৃথিবীর কারো নেই। সেই কাজটি চলচ্চিত্রে হচ্ছে। বাংলাদেশে  সিনেমা রক্ষা করার একমাত্র জায়গা এফডিসি। এখানে ৪০ বছরে ৪৪ জন এমডি পরিবর্তন হয়েছে। যাদের মধ্যে একজনেরও ফিল্ম সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।’

শক্তিমান অভিনেতা সোহেল রানা

“ঠিক সেরকম মা যদি ভালো না হয়, তার বাচ্চাটা ভালো হবে কিভাবে। তাহলে ভালো চলচ্চিত্র কিভাবে নির্মাণ হবে। হ্যাঁ, বর্তমানে যে সিনেমাগুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলো অনেকটা ব্যক্তিগত ক্ষমতায়, ব্যক্তি প্রচেষ্টা, কিছু মেধাবী নির্মাতার দক্ষতায়। সেসব সিনেমা দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ  নির্মাতা তাদের কাজগুলোকে ভালো বলতে পারছে না। তারাই সিনেমাকে দু’টি ভাগে ভাগ করে দিয়েছে। প্রথমটিকে  তারা বলছে ভালো সিনেমা, দ্বিতীয়কে বলছে বিকল্পধারার সিনেমা।”

তার দাবি, সমাজ বিকল্পধারায় চলছে তাই সিনেমাও বিকল্প পদ্ধতিতে নির্মাণ হচ্ছে। সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সবকিছুই বিকল্প হয়ে গেছে।

অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গেই মার্শাল আর্টের এক সময়ের এ সুপার হিরো,  ‘বাংলাদেশ বারো মাসে তেরো পার্বণের দেশ। বাঙালি উৎসবগুলো এত বেশি শক্তিশালী যে অন্য দেশের উৎসবগুলো আমাদের পালন করার কোনো দরকার নেই। কিন্তু এখন দেখছি আমরা অন্য দেশের উৎসবগুলো ভিক্ষা করে পালন করছে। যেটি আমাদের সংস্কৃতির উপর আঘাত ফেলছে। এখনও সময় আছে নিজেদেরকে এসব বের আনতে হবে, তাহলেই দেশের চলচ্চিত্র বাঁচবে, সংস্কৃতিও বাঁচবে।