নিবির পর্যবেক্ষণে লাইফ সাপোর্টে আছেন দেশ বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেন। দিনকে দিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে তার।
এমন অবস্থায় তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার মতো অবস্থা নেই বলে জানালেন হাসপাতালে নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ শহিদুল্লাহ সবুজ।
ডাঃ শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, আমজাদ সাহেবের লাইফ রিস্ক এখন অনেক বেশি। সিঙ্গাপুর নিতে হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে মিনিমাম চার-পাঁচ ঘন্টা লাগে। ওই সময়ে যদি অঘটন ঘটে যায় কিছু করার থাকবে না। এ অবস্থা তার বিদেশে নিয়ে যাওয়া খুবই আশঙ্কানক বলে মনে করছি আমরা। যদি রোগীর বিদেশে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা থাকে, অবশ্যই আমরা অবহিত করবো। শুরুতেই ৭২ ঘন্টা সময় নিয়েছিলাম। ইতোমধ্যে ৬০ ঘন্টা হয়ে গেছে। অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে নির্মাতা আমজাদ হোসেনের দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল এবং সোহেল আরমানকে নিজ কার্যালয়ে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি আমজাদ হোসেনের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নেন। প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার প্রয়োজন হলে, অবশ্যই ব্যবস্থা করবেন।
ডাঃ শহিদুল্লাহ সবুজ জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে হাসপাতালে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। রোগীর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে অবশ্যই এ ব্যাপারে জানাবেন। এদিকে, আজ (মঙ্গলবার) আমজাদ হোসেনের শারীরিক অবস্থা দু-একটা সেক্টরে আরও খারাপ হয়েছে বলে জানা যায়। ডাক্তার জানান, আমজাদ হোসেনের কিডনির ফাংশন থ্রি পয়েন্ট টু ফাইভ, যেটা গতকাল ছিল টু। বর্তমানে তার প্রেসার আপডাউন হচ্ছে।
ডাঃ শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, আমজাদ হোসেন আমাদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ। সেজন্য তার চিকিৎসার দিকে আমাদের সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে। যিনি যে ধরনের স্ট্রোক করেছেন, সেখান থেকে ভালো হতে দেখা যায় না। কিন্তু আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাকিটা উপর আল্লাহর কাছে।
গত রবিবার সকালে নিজ বাসভবনে আমজাদ হোসেন ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন থেকেই তিনি আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় জনপ্রিয়তা পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি।
বর্ষীয়ান চলচ্চিত্র পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া নানামাত্রিক কাজের জন্য ১৪ বার জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। একইসাথে বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।