চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আফগানিস্তানে ‘মানবিক যুদ্ধ বিরতি’র আহ্বান

তালেবান-আফগান সরকার শান্তি আলোচনা

শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাতারে জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানদের সাথে আলোচনায় ‘মানবিক যুদ্ধ বিরতি’র আহ্বান জানিয়েছে আফগানিস্তান সরকার।

রোববার শান্তি আলোচনার অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকরের উপায় নিয়ে আফগান সরকার ব্যস্ত সময় পাড় করছে।

শান্তি প্রক্রিয়ায় আফগান সরকারের প্রধান বলেছেন, তালেবানরা যুদ্ধের বিনিময়ে কারাবন্দি আরো যোদ্ধাদের মুক্তির দাবি জানাতে পারে।

আফগান উচ্চ পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এটি তাদের ধারণাগুলোর মধ্যে একটি অথবা দাবিগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে মানবিক হতে হবে। প্রাণহানি বন্ধে উভয়পক্ষকেই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।’

আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ বলেন ‘ এ যুদ্ধের বিজয়ী নেই’। আফগানিস্তানকে ইসলামী আইনের আওতায় আনার পরিবর্তে তালেবানরা যুদ্ধ বিরতির কথা উল্লেখ করেনি।

শান্তি ফিরিয়ে আনতে সবার আগে আফগানিস্তানে ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা চালুর দাবি জানায় তালেবান। ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য তালেবান ইসলামকে বিসর্জন দিতে চায় না বলেও জানায় তারা।

তালেবানের সহ প্রতিষ্ঠাতা আবদুল গনি বরদার বলেন, আফগানিস্তান ইসলামিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষকে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য উৎসাহিত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে শান্তির সুযোগ গ্রহণের আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা আগামী দিন, সপ্তাহ এবং মাসের আলোচনায় নি:সন্দেহে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবো।’

আফগান উচ্চ পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ, তালেবানের ডেপুটি নেতা মোল্লা আব্দুল ঘানি বারাদার এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এতে অংশ নেন।

দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে আফগানিস্তানে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। এবার শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশটির নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি আলোচনায় অংশ নিলো তালেবান।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে পৌঁছায় সশস্ত্র এ গোষ্ঠী। চুক্তি অনুযায়ী, সেনা প্রত্যাহার ও কারাবন্দী তালেবান সদস্যদের মুক্তি মিললে আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয় তারা।

এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মার্চ মাসে আফগান শান্তি আলোচনা শুরুর কথা থাকলেও তালেবানের এ বিতর্কিত নেতার মুক্তি নিয়ে মতবিরোধের জেরে তা পিছিয়ে যায়।

পর্দার আড়ালে কয়েক মাস দর কষাকষির পর অবশেষে আফগান সরকারের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসলেন তালেবান নেতারা।

আলোচনার শুরুতেই নিজেদের প্রস্তাব তুলে ধরে আফগান সরকারের প্রতিনিধি দল। এতে আফগানিস্তানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় তালেবানকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানায় তারা।

এই বৈঠক ফলপ্রসূ হলে তা ঐতিহাসিক ঘটনা হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কয়েক দশকের যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ফের শান্তির বাতাবরণ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।