গত রাতে বাংলাদেশের ঘাম ঝরানো জিম্বাবুইয়ানদের ১৯৮ রানের লক্ষ্য দিয়ে ১৬৯ রানে থামিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ২৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে রশিদ খানের আফগানিস্তান।
মিরপুরে আফগানিস্তান ৫ উইকেটে স্কোরবোর্ডে দুইশ ছুঁইছুঁই সংগ্রহ তোলার পরই আসলে ম্যাচের ফল অনেকটা বোঝা হয়ে গেছে। রশিদ-মুজিবদের মতো বোলার দিয়ে সাজানো দলের বিপক্ষে এই রান টপকে জিতবে জিম্বাবুয়ে, এমন ভাবনা ভাবাও বেশ কঠিন! শেষপর্যন্ত জয় পেতে বেশি কষ্টও করতে হয়নি আফগানদের।
আগে বোলিং করে শুরুতেই যদি আফগানদের চাপে ফেলা যায় এমন ভাবনা থেকেই হয়তো শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তার সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়ে এসেছে। ব্যাটিংয়ে নেমেই প্রতিপক্ষ বোলারদের ছাতু বানানো শুরু করেন অভিষিক্ত আফগান ওপেনার রহমতউল্লাহ ঘুরবাজ। তার তাণ্ডবে ৫ ওভারে রান ওঠে ৪৯।
রহমতউল্লাহর মারকাটারি ব্যাটিংয়ে আড়ালে পড়ে যান আরেক ধ্বংসাত্মক ব্যাটসম্যান হযরতউল্লাহ জাজাই। ষষ্ঠ ওভারে তাকে ফিরিয়ে ওপেনিং জুটি ভাঙে জিম্বাবুয়ে। ২৪ বলে ৪৩ করে পরের ওভারে ফিরে যান রহমতউল্লাহও। শন উইলিয়ামসের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৫ চারের সঙ্গে মেরে গেছেন ২ ছক্কাও। আফগানদের রান তখন ৬০।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কিছুক্ষণের জন্য দখলে নেয় জিম্বাবুয়ে। এসময় দ্রুত ফিরে যান নাজিব তারাকাই ও অভিজ্ঞ আসগর আফগান। দুজনেই ফিরেছেন ১৪টি করে রান এনে। তখন পর্যন্ত অবশ্য বোঝাও যায়নি ইনিংসের পরের অংশে আরও ঝড় বইতে চলেছে!
চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আসগর আফগান যখন ফেরেন, রান তখন ১৩.২ ওভারে ৯০। সেই আফগানিস্তানই পরের ৬.২ ওভারে রীতিমত সাইক্লোন বইয়ে দিয়ে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে রান তুলেছে ১০৭।
আসগর আফগান আউট হয়েছিলেন অভিষিক্ত আনসলে এনডল্ভুর বলে। পরের বলে ব্যাটিং প্রান্তে গিয়েই ঝড় তোলা শুরু করলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। তিন বলে তুলে নেন ১১ রান। সেই যে শুরু, পরে আর তাকে থামাতেই পারেনি জিম্বাবুয়ের বোলাররা।
শুরুতে দেখেশুনে খেলার পর ১৭তম ওভারে তাণ্ডবে যোগ দেন মোহাম্মদ নবিও। টেন্ডাই চাতারার করা সেই ওভারে শেষ চার বলে টানা ৪ ছক্কা মেরেছেন অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে প্রথম তিন বলে টানা ছক্কা মারেন নাজিবুল্লাহও। টানা সাত ছক্কায় রান এসেছে ৪২।
টানা ৪ ছক্কায় ১৮ বলে ৩৮ করা নবি আউট হয়েছেন ইনিংসের শেষ বলে। তার সঙ্গী নাজিবুল্লাহ ছিলেন অপরাজিত, ৬ ছক্কা ও ৫ চারে ৩০ বলে করেছেন সর্বোচ্চ ৬৯ রান।
জবাবে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ২৫ রানের মাথায় ওপেনিং করতে নামা মাসাকাদজা রানআউট হয়ে ফেরার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে দলটি।
শেষদিকে অপরাজিত রাগিস চাকাভা ২২ বলে ৪২ করে প্রতিরোধ গড়লেও শুরুর দিকে উইকেট হারানোই কাল হয়েছে জিম্বাবুয়ের। জয়ের লক্ষ্য থেকে ২৮ রান দূরে থাকতে ৭ উইকেটে ১৬৯ রানে থামে মাসাকাদজাদের ইনিংস।
২৯ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন রশিদ খান। পেসার ফরিদ আহমেদেরও উইকেট দুটি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন করিম জানাত ও গুলবাদিন নাইব।