রোহিঙ্গাদের উপর যে অমানবিক আচরণ, নির্যাতন ও সহিংসতা পরিচালনা করছে মিয়ানমার তা আন্তর্জাতিক আদালতে তুলে বিচার করা উচিত বলে মত দিয়েছেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসিতে অংশ নেওয়া প্রতিযোগী, বিচারক ও বক্তারা।
শনিবার সকালে এফডিসিতে আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’তে অংশ নেওয়া সরকারি দল স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও বিরোধী দল ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বক্তারা এমন দাবি তোলেন।
‘রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ভূমিকা’ শীর্ষক এ বিতর্ক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির।
এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করা ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এ সংকটে জাতিসংঘকে পক্ষপাতহীন, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
প্রয়োজনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাসহ যে কোনো ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহবান জানান তিনি।
অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে শুরু থেকেই বাংলাদেশ ভুল পথে এগোচ্ছে। প্রথমে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাস ও মাদক পাচারকারী অপবাদ নিয়ে মিয়ানমারের সাথে যৌথ অভিযানের প্রস্তাব অনেক বড় ভুল ছিল। না হলে মিয়ানমার এত সাহস পেত না। এখন আবার সেফ জোন নির্মাণের যে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে তা আরেকটা বড় ভুল।
“কেননা, অতীতে ফিলিস্তিনসহ যে সব দেশে সেফ জোন বাস্তবায়ন করা হয়েছে সে সব সমস্যা স্থায়ী আকার ধারণ করেছে। ফলে মিয়ানমারের সাথে আলোচনা ও প্রয়োজনে চাপ দিয়ে গণহত্যা বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যার যার বাড়ি-ঘর ফিরিয়ে দেওয়াই একমাত্র সমাধান।”
জিয়াউর রহমানের ১৯৭৮ সালের মিয়ানমার চুক্তির কথা উল্লেখ করে খসরু বলেন, জিয়াউর রহমানের ১৯৭৮ সালের মিয়ানমার চুক্তি বাস্তবায়নই পারে চলমান সংকট সমাধান করতে।
মোহাম্মদ জমির বলেন, মিয়ানমার সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধের নামে জাতি নিধন করছে। কারণ আরসা গঠিত হয়েছে কয়দিন হলো। অথচ তারা চারদশক ধরে রোহিঙ্গাদের হত্যা ও ঘর ছাড়া করছে। জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের উচিত অচিরেই মিয়ানমারকে থামানো এবং আন্তর্জাতিক আদালতে এর বিচার করা।
বিতর্ক শেষে বিজয়ী ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।