চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ঢাকার বাইরে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল হিসেবে ৪টি স্থান নির্বাচন

আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল হিসেবে ঢাকা মহানগরীর শহরতলির চারটি স্থানকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। 

বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির নিকট কারিগরি কমিটি কর্তৃক আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ও ডিপোর জন্য প্রস্তাবিত ১০টি স্থানের মধ্যে একটি বাটুলিয়া এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি আজ সকালে গণমাধ্যমের কাছে এ কথা বলেন।

এ সময় ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বাস রুট রেশনালাইজেশনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা পুরো গণপরিবহন ব্যবস্থাকে এটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাই। আমরা এরইমাঝে কাজ আরম্ভ করেছি। সে পরিপ্রেক্ষিতেই গত সভাতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল এর জন্য যে দশটি স্থানকে নির্বাচন করা হয়েছে, সেখান থেকে আমরা তালিকা ছোট করে এনেছি। আমরা মনে করেছি যে, সার্বিকভাবে চারটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে। সে পরিপ্রেক্ষিতে আজকে আমরা বাটুলিয়ায় সরেজমিন পরিদর্শনে এসেছি।

সরেজমিনে পরিদর্শনের কারণ স্থানগুলোর কার্যকারিতা দেখতে চাওয়া জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, বাটুলিয়ার পর আমরা সাভারের হেমায়েতপুর, কামরাঙ্গীরচরের তেঘরিয়া ও কাঁচপুর পরিদর্শনে যাব। এই চারটি স্থান পরিদর্শনের পর আমরা আগামী জানুয়ারি মাসে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভা দিয়েছি। সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। সিদ্ধান্তের পর আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো যে কোনগুলোতে টার্মিনাল স্থাপন করা যাবে। আমাদের লক্ষ্য হলো ঢাকা শহরের উপর থেকে চাপটা কমিয়ে আনা।

বহির্বিশ্বে আন্তঃজেলা গণপরিবহন শহরের মধ্যে ঢুকে না উল্লেখ করে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় আরও বলেন, কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি শহরের মধ্যে যে বাস টার্মিনালগুলো আছে, যেমন- মহাখালী, সায়দাবাদ, গাবতলী-আন্তঃজেলা বাসগুলো সেসব টার্মিনাল ব্যবহার করে থাকে। সিটি বাস টার্মিনাল আমাদের কার্যকর নেই। তার মানে যত্রতত্রভাবে সিটি বাসগুলো রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে থেকে যানজট সৃষ্টি করে এবং একটি বিশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি করে। সবকিছু মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে গণপরিবহনে একটি শৃঙ্খলা নিয়ে আসতে আমাদের এই কার্যক্রম। আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে, যাতে করে আগামী বছরের মধ্যে আমরা একটি সুনির্দিষ্ট রূপরেখার আওতায় আসতে পারি।

অন্যদিকে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি বাস্তবায়নের ফলে বাইরের বাসগুলো ঢাকা শহরের মধ্যে ঢুকতে পারবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।

উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, শহরের বাস শহরের ভেতরে চলবে এবং শহরের বাইরের বাস অর্থাৎ আন্তঃজেলা বাস একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এসে থেমে যাবে। বাস রুট ফ্রেঞ্চাইজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শহরের বাইরের বাস ঢাকার মধ্যে ঢুকতে পারবে না। কারণ এখন শহরের বাসের সাথে আন্তঃজেলা বাসের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এতে কিন্তু আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে এবং ট্রাফিক জামের চেষ্টা হচ্ছে। সুতরাং শহরের বাসকে শহরের ভেতরে চলতে হবে এবং একটি নির্দিষ্ট রুটের মধ্যে চলতে হবে।

ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, গত সভাতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকায় ঘাটারচর হতে মতিঝিল পর্যন্ত, যেখানে ১৬০টির বেশী বাস ও ২৯ জনের বেশি মালিকের বাস চলাচল করে। কিন্তু সেটিকে আমরা একটি কোম্পানির মধ্যে নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।

বাস মালিক ও শ্রমিকরাও এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই চাই একটি শৃংখলা আনতে। তাই শৃঙ্খলা আনার জন্য শহরের বাস শহরের ফ্রেঞ্চাইজ রুট দিয়ে চলবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পয়লা এপ্রিল থেকে ঘাটারচর-মতিঝিল রুটে আমরা প্রথম (বাস রুট ফ্রেঞ্চাইজি) শুরু করতে যাচ্ছি।

পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমানসহ দুই সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।