প্রায় ৭০ বছর পর উদ্ধার হয়েছে আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরির নতুন দুটি পাতা। আর এ দুই পাতা জুড়ে রয়েছে একজন কিশোরীর দৃষ্টিতে তার যৌন শিক্ষা ও যৌনতা বিষয়ক ভাবনাগুলো।
বিশ্বজুড়েই আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি সর্বাধিক পঠিত বইগুলোর একটি। রোজগারলিপি আর আনা ফ্রাঙ্ক যেন সমার্থক দুটি শব্দ হয়ে গেছে।
আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরির বিষ্ময়কর লেখনী ইতিহাসে অনবদ্য দলিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে থাকার সময় প্রতিদিনের বিবরণ সে লিখে গেছে ডায়েরির পাতায়।
নাৎসিদের চালানো হত্যাযজ্ঞের বর্ণনার পাশাপাশি সেখানে ঠাই পেয়েছে একজন ১৩ বছর বয়সী কিশোরীর ব্যক্তিগত ভাবনাগুলোও।
এত বছর পর আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে নেদারল্যান্ডের ‘আনা ফ্র্যাংক হাউজ মিউজিয়ামে’ ডোনাল্ড লিওপোর্ট নামের এক গবেষক ১৯২৪ সালে আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরির দুটি পাতা উদ্ধার করেন।
ওই গবেষক জানান, আনা ১৩ বছর বয়সে তার ডাইরিতে চারটা ‘ডার্টি জোকস’ লুকিয়ে রাখে। সেগুলো হলো- যৌনতা, যৌন তৃপ্তি, গর্ভনিরোধ বা জন্মনিয়ন্ত্রণ এবং পতিতাবৃত্তি।
উদ্ধার করা ডায়েরি পাতায় আনা যৌনতা সম্পর্কে লিখেন, ১৪ বছর বয়সে একটা মেয়ের পিরিয়ড হলে বুঝতে হবে সে একটা পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্কের জন্য পরিপক্ক। কিন্তু এটা অবশ্যই বিয়ের আগে না।
পতিতাবৃত্তি সম্পর্কে আনা ডায়েরি লিখেছেন, প্যারিসে বড় বড় অনেক বাড়ি আছে যেখানে পতিতাবৃত্তি হয়ে থাকে। আনা ডাইরি এমনভাবে লিখত যেন কোন কাল্পনিক বন্ধুকে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে সে।
নিউয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আনা ফ্রাঙ্ক হাউসের নির্বাহী পরিচালক রোনাল্ড লিওপল্ড বলেন, সম্প্রতি এই আবিষ্কার আনা ফ্রাঙ্কের সম্পর্কে ভবিষ্যতে লেখালেখিতে কাজে দিবে।
তিনি আরও বলেন, সেই সময়ে আনা কাল্পনিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সংবেদনশীল বিষয় গুলো সম্পর্কে খুব সাবলীল ভাষায় লিখেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৪ সালে আনা ফ্রাঙ্কের পরিবারকে আটক করে ক্যাম্পে পাঠানো হয়। ১৯৪৫ সালে আনা ফ্রাঙ্ক এবং তার বোন মার্গট মারা যান।
আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি এখন পর্যন্ত বিশ্বে ৭০টির বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। হিটলারের পৃথিবীতে ইহুদিদের করুণ পরিনতিই ফুটে উঠেছে ডাইরির প্রত্যেক পাতায় পাতায়।