আদালত অবমাননার কথা স্মরণ করিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গাছ কাটা বন্ধ করতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৩ জনকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বৃহস্পতিবার মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ, গণপূর্ত বিভাগের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মো: শামিম আখতার ও চীফ অর্কিটেক্ট অব বাংলাদেশ মীর মনজুর রহমানকে ইমেইলে নোটিশটি পাঠিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছ কাটা বন্ধ করে রেষ্টুরেন্ট/দোকান স্থাপনের কার্যক্রম বাতিল না করলে আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হবে।
আজকের এই নোটিশে হাইকোর্টের রায় উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা নিছক একটি এলাকা নয়। এই এলাকাটি ঢাকা শহর পত্তনের সময় হতে একটি বিশেষ এলাকা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে এবং এর একটি ঐতিহাসিক ও পরিবেশগত ঐহিত্য আছে। শুধু তাহাই নয়, আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্র এই এলাকা। এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ এলাকাটি একটি বিশেষ এলাকা হিসাবে সংরক্ষণের দাবী রাখে। এখানে এমন কোন স্থাপনা থাকা উচিত নয় যাহা এই এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বিন্দুমাত্র ম্লান করে। আর পরিবেশগত দিক থেকে রমনার উদ্যান বা রমনা রেসকোর্স ময়দান ঢাকা শহরের দেহে ফুসফুসের ন্যায় অবস্থান করছে। কোনভাবেই ইহাকে রোগাক্রান্ত করা যায় না। যেহেতু স্মরণকাল হইতেই এটি উদ্যান হিসাবে পরিচিত, সেহেতু আইন অনুসারে ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান’ সংজ্ঞার আওতাধীন এই জায়গার শ্রেণী সাধারণভাবে অপরিবর্তনীয়। ইহাকে অনাবশ্যক স্থাপন দ্বারা ভারাক্রান্ত করা অবৈধ হইবে।’
এই নোটিশে আরো বলা হয়, ‘আদালতের রায় উপেক্ষা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে ব্যবসায়িক স্বার্থে রেষ্টুরেন্ট/দোকান প্রতিষ্টার জন্য পরিবেশ ধংস করে অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যা হাইকোর্টের রায়ের সম্পুর্ন পরিপন্থি।’
অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘আন্তর্জাতিক মানের স্মৃতিকেন্দ্র’ গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘কিছু গাছ’ কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, কিছু গাছ কাটা হলেও সেখানে আরও এক হাজার গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর গাছ কাটা নিয়ে ‘খণ্ডিত তথ্য’ প্রচারে জনমনে ‘বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করা হয় ওই বিবৃতিতে।