দিন দিন আমরা আসলে কোথায় যাচ্ছি? হ্যাঁ, এমন প্রশ্নই এখন আমাদের করতে হচ্ছে। কারণ, খোদ আদালতের ভেতর দিনদুপুরে এমন এক খুনের ঘটনা ঘটেছে, যা বলতে গেলে নজিরবিহীন।
চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা যায়, কুমিল্লার তৃতীয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারকাজ চলার সময় বিচারকের সামনে খুন হয়েছে এক আসামী। হত্যা মামলার আসামী হাসানের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে একই মামলার অপর আসামি ফারুক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ সালের একটি হত্যা মামলায় মামলার হাজিরা দিতে সোমবার আদালতে এসেছিলেন আসামি হাসান ও ফারুক। এসময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাসান তার সাথে থাকা একটি ছুরি বের করে ফারুকের উপরে হামলা করে। ফারুক সেসময় এজলাস থেকে বের হয়ে বিচারকের খাস কামরায় দৌড়ে পালিয়ে যায়। হাসান তখন পিছে পিছে বিচারকের খাস কামরায় ঢুকে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় অবশ্য খুনি হাসান পার পায়নি। আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সেসময় হাসানকে আটক করেছে। ঘটনার পরে কুমিল্লা জেলা জজ আদালত ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। এতে অবশ্য কিছু যায় আসে না, কারণ ইতোমধ্যেই আদালতের ভেতর কলঙ্কজনক ঘটনা গেছে। বিচারপ্রার্থীর রক্তে রক্তাক্ত হয়েছে পবিত্র আদালত।
এখন স্বাভাবিকভাবেই আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এছাড়া এ ঘটনা আসামীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে বিচারক কিংবা অন্য কারও সঙ্গেও হতে পারতো। তাই আদালতের ভেতরে ছুরি নিয়ে কীভাবে প্রবেশ সম্ভব হলো এ বিষয়টি গুরুত্ব নিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনে এখন থেকে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের আগে সবার নিরাপত্তা তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে। কোনোভাবেই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না।
এর আগেও আমরা আদালত, বিচারক এবং আইনজীবীদের ওপর জঙ্গি সন্ত্রাসীদের হামলা দেখেছি। এমনকি এসব ঘটনায় বিচারকসহ কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। এরপর থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবি উঠেছিল। এবার এই ঘটনা আমাদের আবারও শঙ্কিত করে তুলেছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবশ্যই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিচারসংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই বলেই আমরা মনে করি।