পর্নোকাণ্ডে স্বামী রাজ কুন্দ্র আছেন জেলবন্দি, এদিকে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলোধুনো হচ্ছেন স্বয়ং শিল্পা। যদিও শুরু থেকেই বলে আসছেন, স্বামীর অপকর্ম সম্পর্কে কিছুই জানতেন না তিনি। এবার সমালোচকদের বিরুদ্ধে আদলতের শরণাপন্ন হয়ে নিজেই ভৎসর্নার শিকার অসংখ্য হিট ছবির এই নায়িকা।
পর্নোকাণ্ডে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে মিডিয়া- এমন অভিযোগ এনে একাধিক সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মের নামে ২৫ কোটি টাকার মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন শিল্পা শেঠি। শুক্রবার মুম্বাই হাইকোর্টে চললো এই মামলার শুনানি।
বিচারপতি গৌতম এস প্যাটেলের এজলাসে শিল্পার দায়ের করা মানহানির মামলার শুনানি হয়। এদিন রীতিমতো আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন শিল্পা। পুলিশের দেওয়া তথ্য চ্যানেলে সম্প্রচার করা হলে বা সংবাদপত্রে অথবা ডিজিটাল প্লাটফর্মে প্রকাশিত হলে সেটা কীভাবে মানহানিকর? শিল্পার আইনজীবীর কাছে জানতে চায় হাইকোর্ট।
আদালতের সাফ বক্তব্য, পুলিশ অথবা ক্রাইম ব্রাঞ্চের তরফে দেয়া কোনও তথ্য পেশ করা কখনই মানহানিকর বলে বিবেচ্য হতে পারে না। সেই কারণেই এই মামলার কোনওরকম অন্তর্বতীকালীন অব্যাহতি পেলেন না শিল্পা।
পাশাপাশি এদিন মুম্বাই হাইকোর্ট নিজের পর্যবেক্ষণে এটাও জানায়, ‘প্রেসের স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার অধিকার (রাইট টু প্রাইভেসি)-র মধ্যে একটা সমতা বজায় রাখতে হবে। বাকস্বাধীনতার পথ সংকীর্ণভাবে তৈরি করতে হতে পারে, কিন্তু গোপনীয়তার অধিকার প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার এবং তা সংবিধানসিদ্ধ। তাই কোনও মানুষ পাবলিক ফিগার মানে এই নয়, তাকে নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা বিসর্জন দিতে হবে’।
আদালত এদিন স্পষ্টভাবে নিজের পর্যবেক্ষণে বলেন, শিল্পা দুই নাবালক সন্তানের মা, সেকথা সকলকে মাথায় রাখতে হবে। সেই কারণে একজন পাবলিক ফিগার হলেও তার ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা নিয়ে কাটাছেঁড়া করা অনুচিত। তবে এটার অর্থ কোনওভাবেই এটা নয় যে আদালত স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে সত্য ঘটনা তুলে ধরতে মিডিয়ার উপর কোনওরকম নিষেধাজ্ঞা জানাচ্ছে তা পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট করে বলেন বিচারপতি। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ২০শে সেপ্টেম্বর।
মুম্বাই হাইকোর্টে দাখিল আবেদনপত্রে শিল্পা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা, অসত্য এবং অবমাননাকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে আবেদন জানিয়েছেন। পর্নোকাণ্ড সংক্রান্ত নানান খবর পরিবেশনের সময় রঙ চড়িয়ে পেশ করছে বেশ কিছু মিডিয়া হাউজ, তাতে অভিনেত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি। অবিলম্বে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম এবং নিজস্ব সাইট থেকে সেই সকল কনটেন্ট মুছে ফেলবার এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিল্পা। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ হিসাবে ২৫ কোটি টাকার মোটা অঙ্কও দাবি করেছেন অভিনেত্রী।
পর্নোকাণ্ডে গত ১৯ জুলাই মুুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে গ্রেপ্তার হন রাজ কুন্দ্র। মুম্বাই হাইকোর্ট অভিযুক্তর জামিনের আর্জির তৃতীয় দিনের শুনানি হবে আজ।