একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ১৪টি বিষয় বিবেচনায় এনে রায় দিয়েছেন আদালত। ১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগের জনসমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে একাধিক বিষয় বিবেচনায় আনার কথা জানিয়েছেন আদালত।
এগুলো হলো, আসামী আহসান উল্লাহ কাজলের ভাড়া করা পশ্চিম মেরুল বাড্ডার ম-৩০ নম্বরের ফ্ল্যাটের তৃতীয় তলায় আসামীরা একত্রিত হয়ে ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট ২৩ নম্বর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে হামলার জন্য পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি গ্রহণ এবং সেখান থেকে গ্রেনেড নিক্ষেপকারীরা গ্রেনেড সংগ্রহ করেছিলো কিনা তা বিবেচনায় আনেন আদালত।
অবসরপ্রাপ্ত খাদ্য পরিদর্শক রুহুল আমিনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে আসামী মুফতি আব্দুল হান্নান মুন্সি জঙ্গী কর্মে নিযুক্ত ছিল কিনা এবং ওই বাড়ি থেকেই মুফতি হান্নান ২০০৫ সালে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল কিনা।
মেরুল বাড্ডায় অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল গোলাম রাব্বানী বাড়ির তৃতীয় তলা আসামীরা ভাড়া নিয়ে গ্রেনেড সরবরাহ করতো কিনা।
জোট সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ধানমন্ডিতে সরকারি বাসভবনে ২০০৪ সালের ১৮ আগস্ট আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফুজ্জামান বাবর, আসামী মুফতী হান্নান, কাজল, আবু তাহের ও মাওলানা তাজউদ্দিন গং ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেনেড নিক্ষেপ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলো কিনা।
২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট আসামী কাজল, আবু তাহের, আব্দুস সালাম পিন্টু, মুফতি মঈন পরিকল্পনা ও অপরাধ সংঘটনের জন্য প্রয়োজনীয় শলা-পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র করেন কিনা।
ঢাকার মোহাম্মদপুরের নূর রিয়াল এষ্টেটের নিচতলায় হরকাতুল জেহাদ আল ইসলামী সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা হতো কিনা, আসামীরা ওখানে একত্রিত হতো কিনা এবং গ্রেনেড সংগ্রহ করতো কিনা।
গুলশানে ‘হাওয়া ভবন’ বিএনপি জামাত ঐক্য জোট সরকারের কার্যক্রমের কেন্দ্র বিন্দু ছিল কিনা, হাওয়া ভবনে পলাতক আসামী তারেক রহমান অপরাধ সংঘটনের জন্য ষড়যন্ত্র মূলক সভা করেন কিনা।
নূর রিয়েল এষ্টেট এলাকাধীন সাতগম্বুজ মসজিদে ঘটনার আগে আসামীরা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা করে কিনা।
আসামীদের নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে ও অপরাধের দায় থেকে বাঁচার সুযোগ করে দেয়ার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা।
বিভিন্ন স্থানে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও পূর্বপরিকল্পনা করে পরবর্তীতে মূল ঘটনাস্থল আওয়ামী লীগ কার্যালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ-এর সামনে ঘটনার তারিখ ও সময়ে আর্জেস গ্রেনেড হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় নেতা-কর্মীসহ ২৪ জনকে হত্যা এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করার অপরাধে আসামীগণকে দণ্ডবিধি ১২০বি/ ৩২৪/ ৩২৬/ ৩০৭/ ৩০২/ ১০৯/ ২০১/ ২১২/ ২১৭/ ২১৮/ ২৩০ ও ৩৪ ধারায় শান্তি প্রদান করা যায় কিনা তা বিবিচনায় এনেছেন আদালত।
এসব বিষয়গুলো বিবেচনায় এনে রাষ্ট্র ও আসামী পক্ষের শুনানী যুক্তিতর্ক শেষে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ, ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: