ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আবারও ওয়েবসাইটে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করেছে দেশটির সরকার। সেই হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রাজিলে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছেন ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষের এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৩০০ জন। যা বিশ্বব্যাপী একদিনের সর্বোচ্চ আক্রান্ত এবং মৃত্যুর রেকর্ড।
গত সপ্তাহে শুধু দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে দাবি করে আর বিস্তারিত তথ্য দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিল তারা।
এর পরপরই বিশ্বজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। ব্রাজিলে করোনা সংক্রমণের তথ্য গোপন ও বিকৃত করে প্রকাশের আশঙ্কা করে বোলসোনারো সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন বিশ্লেষকরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দেশটির বিচারপতি মোরাইস সরকারি ওয়েবসাইটে করোনা সংক্রমণের বিস্তারিত তথ্য পুনঃপ্রকাশের নির্দেশ দেন। এজন্য সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন তিনি। সময় শেষ হওয়ার আগেই আদালতের নির্দেশ পালন করেছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুয়ায়ী, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৫ হাজার ১৬৫ জন। মৃত্যুর এই মিছিলে গত মাস থেকে এগিয়ে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। এর পরের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটিতে একদিনে আক্রান্ত এবং মৃত্যু হয়েছে ২০ হাজার ৮৫২জন এবং মারা গেছে ৯৮২ জন।
বিশ্বব্যাপী লকডাউন এবং করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ পরিবর্তন করায় হুট করে ইউরোপের দেশর পর করোনার সংক্রামণ বাড়তে শুরু করেছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকো, চিলি এবং পেরুতে।
মেক্সিকোতে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৫৯৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৯৯ জন। অন্যদিকে চিলিতে করোনাভাইরাসে ১৯২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭৩৭ জন। পেরুতে ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৭ জন।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে টানা কয়েকদিনের মতো গত ২৪ ঘণ্টায়ও আক্রান্ত ও মৃতের দিক থেকে এগিয়ে ভারত। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৩৭৫ জন। মারা গেছেন ৩৮৮ জন।
গত ১০ জানুয়ারি চীনের উহানে ৪১ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলে দেশটির সরকার। এরপর বিশ্বজুড়ে সংখ্যাটি ১০ লাখে পৌঁছায় ১ এপ্রিল। এরপর প্রতি দুই সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ করে বাড়ছে।
পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় গত ১১ মার্চ করোনা ভাইরাস সংকটকে মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকলেও অনেক দেশ লকডাউন তুলে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থল খুলে দিতে শুরু করেছে। তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।