চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আটষট্টি বছরে আওয়ামী লীগ

দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ৬৮ বছরে পা রেখেছে। দীর্ঘদিনের পথচলায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধসহ গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে দলটি।

আগামীর পথচলায়ও দলকে নিষ্কলুষ রেখে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন প্রবীণ নেতারা।

নানান কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে দিনটি পালন করছে আওয়ামী লীগ। বিশেষ দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর ৩২ নাম্বারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

ঢাকার টিকাটুলীর রোজ গার্ডেন প্যালেসে, ১৯৪৯ সালে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককের সাধারণ সম্পাদক করে গঠন করা পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৫৫ সালে নতুন নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ।

৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফা এবং ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয়ে প্রতিষ্ঠা পায় আওয়ামী লীগ। যার প্রতিফলন ঘটে ৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি যে স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে তা সত্যি করার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতা এনে দেয় আওয়ামী লীগ, জন্ম নেয় বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর জাতির জনকের নেতৃত্বে শুরু হয় যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ে তোলার কাজ। কিন্তু ৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করা হয়, ৩ নভেম্বর কারাগারের ভেতর হত্যা করা হয় জাতীয় ৪ নেতাকে। হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয় আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মী।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, স্বাধীনতার আগে দুইবার স্বাধীনতার পরে দুইবার মোট চারবার সামরিক শাসন রুখতে আওয়ামী লীগকে সংগ্রাম করতে হয়েছে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। এই সমস্ত নির্যাতন হত্যা খুন সব কিছু প্রতিহত করে আওয়ামী লীগ এগিয়ে এসেছে।

তবে জনসমর্থনের দল আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়নি। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুরু হয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সেই পথও ছিলো কঠিন। বহুবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

সবকিছুকে পেছনে ফেলে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে তখন আবারো আঘাত আসে দলটির ওপর। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং তখনকার বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হয় গ্রেনেড হামলা।

২০০৬ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হলে আবারো প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করতে হয় আওয়ামী লীগকে। তবে ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে পরপর দু’বার সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর আরেক সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের মাটি যতোদিন থাকবে, বাংলাদেশের মানুষ যতোদিন থাকবে, ততোদিন বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের হৃদেয়ের মণিকোঠায় বিরাজ করবে।

আওয়ামী লীগই দেশের উন্নয়নের জন্য ভিশন ২০২১ এবং ২০৪১ এর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এরই মধ্যে দেশকে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে পৌঁছে দিয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশের কাতারে। প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পূর্তি উদযাপন করছে আওয়ামী লীগ।