আজ সরস্বতী পূজা। বিদ্যার দেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন অগণিত ভক্ত এবং শিক্ষার্থীরা।
অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর চরণে প্রণতি জানাবেন তারা। সনাতন ধর্মালম্বীদের মতে, দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী।
‘সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহ তুতে’ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য দেবী সরস্বতীর অর্চনা করা হবে।
শিক্ষার্থী আজ দেবীর পাদপদ্মে অঞ্জলি দেবেন। প্রণতি জানাবেন অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করার। দেবীর সামনে ‘হাতেখড়ি’ দিয়ে শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা হবে অনেক স্থানে।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে মহাসাড়ম্বরে বিদ্যা ও আরাধনার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকে শুরু হয়েছে পূজার্চনা ও অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যায় হবে আরতি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ ছাড়াও হলজুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের বিদ্যার্থীরা তৈরি করেছে বিভিন্ন মোটিফের ওপর ভিত্তি করে প্রতিমা ও বিভিন্ন মেটাফোরিক্যাল মন্ডপ। দৃষ্টিনন্দন এই মহোৎসবে প্রতিফলিত হয়েছে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির শাশ্বত মহিমা এবং একই সময় রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির কলাকৌশল ও বিজ্ঞানের সমন্বিত শিল্পরূপ।
শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে শ্রীশ্রী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ৮টায় পূজার পর পুষ্পাঞ্জলির মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে আনুষ্ঠানিকতা।
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে “হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দেশে বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরও সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে দেবী সরস্বতীর পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে রয়েছে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা।