আজ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমামের ৮৩তম জন্মদিন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে বাবাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন সৈয়দা তানজিনা ইমাম। তিনি লিখেছেন—
আজ আমার আব্বুর ৮৩তম জন্মদিন। একেবারে ঘরোয়াভাবে ভালোবাসা জানালাম। আমাদের পরিবারের মধ্যমনি আমার আব্বুর আদরে প্রশ্রয়ে শিক্ষায় আমাদের বেড়ে ওঠা। আমরা তিন ভাইবোন নয় শুধু, আমার চাচাতো ভাইরা, আমার সন্তানরাও আব্বুর স্নেহে যত্নে আজকের মানুষ হয়েছে।
এই পোস্ট দেখলে হয়তো আরও বহু মানুষ বলবেন, তারাও আমার আব্বুর স্নেহধন্য।
আব্বু অত্যন্ত ব্যস্ত নায়ক,অভিনেতা, সংস্কৃতিকর্মী, সংগঠক, স্বাধীনতা পূর্বকাল থেকে বিভিন্ন পর্যাযের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেও সংসারে কখনোই অমনোযোগী ছিলেন না। তার সন্তান অথবা আমাদের আম্মু ও কখনোই কোন অভিযোগের সুযোগ পাননি।
আমাদের বেড়াতে নিয়ে যাওয়া, মাছ বেছে খাওয়ানো, পরীক্ষার আগে পড়ানো, জন্মদিনে কোন পার্কে, জাদুঘরে বা অন্য কোথাও বেড়াতে নিয়ে যেতে সময়ের অভাব হয়নি। প্রায় প্রতি বছর গ্রীষ্মের বা রোজার ছুটিতে দশ পনের দিনের জন্য বেড়াতে যেতাম। এমনকি আমার সন্তানরাও তাদের নানাভাইয়ের সাথে এমনিভাবে বেরিয়েছে।
আমার দুই ভাইবোন সপরিবারে বিদেশে থাকে। কিন্তু আব্বু আম্মুর দেওয়া পারিবারিক বন্ধন আমাদের দূরে যেতে দেয় না কখনোই। স্থানিক দূরত্ব যেমন কোন ব্যবধান তৈরি করেনি, তেমনি অতো দূরে থেকেও আব্বু অন্য দুই সন্তান ও সমানভাবে দেশদরদী এবং মনে প্রাণে বাংলার সংস্কৃতির ধারক। এসবই আমাদের বাবা মা দাদী- পরিবারের শিক্ষা।
এখনো কোথাও গেলে বাবার পরিচয়ে পরিচয় করিয়ে দেন সবাই। নিজের পরিচয় ছাপিয়ে আব্বুর পরিচয়ে পরিচিত হওয়া আমাকে গর্বিত করে। এমন একজন আমার পিতা যাঁকে দেশের অধিকাংশ মানুষ শ্রদ্ধায় চেনে। আব্বুর প্রাণের গানের ভাষা আমরা হয়তো শিখতে পারিনি। তবে এটা সত্য যে আমরা তিন ভাইবোনই আমুত্যু আব্বুর মতো হবার চেষ্টা করে যাবো নিরন্তর। আমাদের জীবনে আব্বুই আদর্শ।
আমরা তোমাকে শুধু বাবা হিসেবেই ভালোবাসি শ্রদ্ধা করি না, একজন আদর্শ মানুষ হিসাবেও আমাদের আব্বু আমাদের প্রাতঃস্মরণীয়।