চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আকাশবীণায় শুরু হোক নবযাত্রা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য এক ঐতিহাসিক দিন ছিল আজ। এদিন বিমানের বহরে নতুন যোগ হওয়া অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার আকাশবীণার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আমরা জানি, গত ১৯ আগস্ট দেশে পৌঁছার পর ড্রিমলাইনারকে ওয়াটার ক্যানন স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। এখানেই শেষ নয়, এমন ড্রিমলাইনার আরও তিনটি যুক্ত হবে বিমানের বহবে। যার দ্বিতীয়টি আসবে নভেম্বর। বাকি দুটি আগামী বছর সেপ্টেম্বর মাসে। এগুলোর নাম হবে হংসবলাকা, গাঙচিল এবং রাজহংস

এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে বিমানকে মর্যাদাপূর্ণ এয়ারলাইন্সের কাতারে নিয়ে যাবে। দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরে মাসে ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করেছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রায় ৪৬ বছর পর আজকে তার অবস্থান শক্ত থেকে শক্তিশালী হয়েছে। দিনে দিনে বাড়ছে ‍উড়োজাহাজের সংখ্যাও।

৪৬ বছর আগে বিমানবাহিনীর একটি ডিসি-৩ উড়োজাহাজ দিয়ে অভ্যন্তরীণ সেবার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল বিমানের যাত্রা। সাবেক পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা-কর্মচারি অার ১৭ জন পাইলটসহ জন্ম হয় এয়ার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনালের। তবে দুই মাস পরেই ভাড়া করা বোয়িং ৭০৭ উড়োজাহাজ দিয়ে আন্তর্জাতিক আকাশে ডানা মেলে বিমান। শুরু হয় ঢাকা-লন্ডন ফ্লাইট।

এই দীর্ঘ সময়ে বিমানকে বরাবরই আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে থাকতে হয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিপুল সংখ্যক জনবল নিয়োগ, বছরের পর বছর বাড়তে থাকা লোকসানের বোঝা, আসন বিক্রিতে অস্বচ্ছতা, পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের স্বজনপ্রীতি-দুর্নীতির কারণে প্রায় ডুবতে বসেছিল। এমন কি পেট্রো বাংলার কাছে থেকে বাকিতে জ্বালানি কেনা শত কোটি টাকা পরিশোধেও বিমানের ব্যর্থতার কথা সবারই জানা।

এই ধরনের সমালোচনার মধ্যে বিমানের অনেক প্রশংসাও আছে। বিশেষ করে নানাভাবে আন্তর্জাতিক সংকটে পড়া বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা, প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের মরদেহ বিনামূল্যে দেশে বয়ে আনার মতো উজ্জ্বল দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে বিমান।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে বারবার যাত্রীদের নিরাপদ ও অনন্দদায়ক ভ্রমণের কথা বলা হলেও কখনোই অব্যবস্থাপনা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারেনি। এমনকি বিশ্বের অন্তত ৪২টি দেশের আকাশ পথে উড়োজাহাজ চালানোর চুক্তি বা অনুমোদন থাকলেও তার অর্ধেক দেশেও ঠিকমতো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি বিমান।

তবে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানের সেবা ও মানের উন্নতিতে কয়েক বছর ধরে নানা উদ্যোগ নিতে দেখেছি আমরা। এমন কি একজন বিদেশি পেশাদার সিইও নিয়োগ দিয়েছে বিমান। অকারণে নিয়োগ দেয়া বিশাল জনবলও ছাঁটাই করা হয়েছে। এসব উদ্যোগে আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো অবস্থানে এসেছে।

আমরা মনে করি, শুধু সর্বাধুনিক উড়োজাহাজ দিয়েই নয়, এর পাশাপাশি আন্তরিক সেবা এবং পেশাদার আচরণ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলতে বড় ভূমিকা রাখবে।