২০২৩ থেকে ২০৩১ ক্রিকেট বর্ষপঞ্জিতে নতুন দুই বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়ে এগোচ্ছে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসি। শীর্ষ ক্রিকেটখেলুড়ে দলগুলোকে নিয়ে যে দুই আয়োজন মাঠে গড়ালে ওই সময়টাতে প্রতি বছরে একটি করে আইসিসি টুর্নামেন্ট দেখার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
র্যাঙ্কিংয়ের সেরা ১০ দলকে নিয়ে টি-টুয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন্স কাপের আয়োজন করতে চায় আইসিসি, টুর্নামেন্টে মোট ম্যাচ থাকবে ৪৮টি। যা ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে হওয়া মোট ম্যাচের সমান। প্রস্তাব অনুমোদিত হয়ে গেলে ২০২৪ ও ২০২৮ সালে এই টুর্নামেন্ট আলোর মুখ দেখবে।
ওয়ানডে চ্যাম্পিয়ন্স কাপে ম্যাচ থাকবে ১৬টি, অংশ নেবে র্যাঙ্কিংয়ের সেরা ৬ দল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাদ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ভাবছে আইসিসি। নতুন টুর্নামেন্টের সম্ভাব্য সূচী ২০২৫ ও ২০২৯ সাল। এছাড়া ২০২৬ ও ২০৩০ সালে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০২৭ ও ২০৩১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ তো আছেই!
ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের জন্যও টি-টুয়েন্টি ও ওয়ানডে চ্যাম্পিয়ন্স কাপ আয়োজন করতে চায় আইসিসি। ১৫ মার্চের মধ্যে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টগুলো আয়োজনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়ে সদস্য দেশগুলোর কাছে দরপত্র আহ্বান করেছে সংস্থাটি।
চাইলেই যে নতুন টুর্নামেন্টগুলো আয়োজন করে ফেলবে আইসিসি এমনও নয়। আগে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অনুমোদিত হতে হবে প্রস্তাব, সেখানে আসতে পারে সবচেয়ে বড় ধাক্কা। ক্রিকেটের ‘তিন মোড়ল’ খ্যাত- ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড আগেই ভেটো দিয়ে রেখেছে এই টুর্নামেন্টগুলোর ব্যাপারে। গত অক্টোবরের বোর্ড সভায় প্রথমবারের মতো যা নিয়ে আলোচনা উঠতেই ক্ষোভ দেখিয়েছে ওই তিন বোর্ড।
প্রস্তাবনার পেছনে তিন মোড়লের ক্ষোভের কারণ ‘চারজাতি টুর্নামেন্ট’! ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও চতুর্থ আরেকটি দেশকে নিয়ে বিসিসিআই মস্তিষ্কপ্রসূত যে টুর্নামেন্টের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে চলেছে আইসিসির নতুন দুই টুর্নামেন্ট। এছাড়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চলা অবস্থায় দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য আলাদা সময় বের করাও কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করে বোর্ড তিনটি।
জোর সমালোচনার পেছনে আছে আরও সব দাবি। ঘরোয়া টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট আইপিএলকে আরও লম্বা সময় ধরে আয়োজনের চেষ্টায় আছে বিসিসিআই। অন্যদিকে নিজেদের নতুন টুর্নামেন্ট ‘একশো বলের ক্রিকেট’ নিয়ে মাঠে নামছে ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড। অস্ট্রেলিয়ার আছে ‘বিগ ব্যাশ’। ঘরোয়া ওই তিন টুর্নামেন্টের জন্য আলাদা সূচি দাবি করেছে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। যেসময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই আয়োজনের বিপক্ষে তারা।
অন্যদিকে আইসিসির প্রধান নির্বাহী মনু শ্বনির দাবি, প্রতি বছর একটি করে বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে বাড়বে আয়, লাভবান হবে ছোট দেশগুলো।
আরেকটা কারণে টি-টুয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন্স কাপ নিয়ে বিপাকে পড়তে পারে আইসিসি, তা হল অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি। ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে জায়গা হতে পারে ক্রিকেটের, একই বছর হতে পারে টি-টুয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন্স কাপও। একাধিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের ধকল সামলে ওঠাই ভবিষ্যতে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে আইসিসির জন্য।