তার আসল নামটা অলঙ্কৃত হয়ে গেছে তারই আবিষ্কৃত এক পেনাল্টি কিকের কাছে। কেবল ‘পানেনকা’ কিকের জন্যই ফুটবলবিশ্বে কিংবদন্তি হয়ে আছেন আন্তোনিন পানেনকা।
অনেকদিন শিরোনাম হননি। যখন হলেন, খবর ভালো নয়। পানেনকার অবস্থা সঙ্কটাপূর্ণ বলে জানিয়েছে চেক ক্লাব বোহেমিয়ান প্রাহা-১৯০৫। ক্লাবটির সাম্মানিক প্রেসিডেন্ট এখন আইসিইউতে ভর্তি হয়ে লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে।
বোহেমিয়ান প্রাহা টুইটার পোস্টে জানিয়েছে, পানেনকার দেহে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ আছে। ৭১ বছর বয়সী কিংবদন্তির অবস্থা খুবই সঙ্কটাপূর্ণ।
পানেনকার সুস্থতা কামনা করে ভক্তদের শক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফুটবল ক্লাব স্পার্টা প্রাগ ও চেক রিপাবলিক জাতীয় দল।
১৯৭৬ সালে পানেনকার অনন্য এক আবিষ্কৃত শটে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে পেনাল্টি শুট আউটে হারিয়ে উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল তখনকার চেকোস্লোভাকিয়া। নির্ধারিত সময়ে দুই দলের ফল ২-২ গোলে ড্র থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকে। জার্মানির উলি হোয়েনেস বার উঁচিয়ে বল মারায় ম্যাচের ভাগ্য হেলে পড়ে চেকোস্লোভাকিয়ার দিকে।
শেষ পেনাল্টি নিতে আসেন পানেনকা। গোলবারের নিচে তখন জার্মানির কিংবদন্তি গোলরক্ষক সেপ মায়ের। পানেনকা জানতেন তার শট লক্ষ্যভেদ হলেই শিরোপা জিতবে চেকোস্লোভাকিয়া, মায়েরকে বোকা বানানোই তখন প্রধান লক্ষ্য। সে পথে বেশ জোরেই এক দৌড় দেন পানেনকা। তার দৌড় দেখে মায়ের ভেবেছিলেন হয়তো বামে শট নেবেন প্রতিপক্ষ, তিনি সেদিকেই ঝাঁপালেন।
সবাইকে অবাক করে বেশ পলকা এক ভলিতে বলকে তখন আস্তে বাতাসে ভাসিয়ে জালে জড়িয়ে দেন পানেনকা। তখন বেশ জোড়ের সঙ্গে ডানে-বামে শট নেয়ার যে পন্থা অবলম্বন করতেন ফুটবলাররা, এটি তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
পানেনকার অদ্ভুত খেয়ালের ফলে শিরোপা জিতে নেয় চেকোস্লোভাকিয়া, ফুটবল বিশ্বে জন্ম নেয় পানেনকা কিক। পেনাল্টি নেয়ার সময় এখনো মেসি-রামোসদের প্রায়ই এই পন্থায় শট নিতে দেখা যায়।