ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। কিন্তু খেলার পরিস্থিতি, রাজনৈতিক বৈরিতা, প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে কথার যুদ্ধ কখনো কখনো যে মাত্রার ছাড়িয়ে যায়, সে মাত্রায় অনেক সময় নজর রাখতে ভুলে যান ক্রিকেটাররা! এই ভুলে যাওয়া তালিকায় সবার শীর্ষে ভারতীয়রা।
২৪ বছরে প্রায় সব ফরম্যাটে ৭৮টি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে ভারতীয় খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে। ম্যাচ প্রতি নিয়ম-বহির্ভূত আচরণের হার ০.০৭৬৫ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর ২০০৮ সালের ‘মাঙ্কিগেট কেলেঙ্কারি’। স্পিনার হারভজন সিং অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে বানর ডেকে পড়েছিলেন রোষানলে। মামলা গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত।
মাঠে সবচেয়ে বিশৃঙ্খল দেশগুলোর তালিকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে প্রত্যাশিতভাবেই আছে পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৫৮টি এবং অস্ট্রেলিয়ার কাঁধে আছে ৫৩টি গুরুতর অভিযোগ। এই শীর্ষ তিন দেশ একে অপরের মুখোমুখি হলে খেলার বাইরের যুদ্ধ যেন পায় অন্য এক মাত্রা।
খেলোয়াড়দের আচরণের লাগাম টেনে ধরতে ১৯৯২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা আইসিসি ক্রিকেটীয় আচরবিধি প্রণয়ন করে। মাঠের শৃঙ্খলার দায়িত্ব দেয়া হয় ম্যাচ রেফারিদের হাতে। রেফারিরা চাইলে মৃদু তিরস্কার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ জরিমানা করতে পারেন।
১৯৯২ সাল থেকে ২০১৭ সাল। আচরণবিধির অনেক পরিমার্জন, নতুন নতুন নিয়ম কানুন হয়েছে কিন্তু খেলোয়াড়দের আচরণের কোন পরিবর্তন এসেছে? পরিসংখ্যান বলছে খেলোয়াড়দের আচরণ দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে!
নিয়ম ভাঙার জন্য সবচেয়ে পরিচিত অধিনায়কদের একজন হলেন সৌরভ গাঙ্গুলি! আরেকজন ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হক। এই দুই অধিনায়ক একত্রে ১৯টি গুরুতর দণ্ডে দণ্ডিত, যেখানে সৌরভের দাঁয় ১০টিতে আর ইনজামামের ৯টি। ২০০৫ সালে এক বিলবোর্ডে এই দুই সাবেক অধিনায়কের মারমুখী ছবি জন্ম দিয়েছিল সমালোচনার। ফলশ্রুতিতে সৌরভকে পেতে হয়েছিল ৬ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা।
অন্যদিকে বিশৃঙ্খলাকারী দেশগুলোর তালিকার চারে আছে বাংলাদেশ! ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে সব রকম ক্রিকেটে ২৪টি গুরুতর অভিযোগ আছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। ম্যাচপ্রতি টাইগারদের নিয়ম বহির্ভূত আচরণের হার ০.০৫১৫ শতাংশ।