লিবিয়ায় আইএস জঙ্গিদের হাতে নিহত বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আরিফুল করিম সিদ্দিক এর বাবা আবুল কালাম তার ছেলেকে শেষবারের মতো একবার দেখতে চান।
পাঁচ বছর আগে দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন তার ছেলে। এরপর শুধু ফোনে কথা হয়েছে। লিবিয়ার অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে আগামী নভেম্বরে দেশে ফেরার কথা জানিয়েছিলেন আরিফ।
আরিফের বাবা আবুল কালাম বলেন, পাঁচ বছর আমি আমার ছেলেকে দেখি না। আমার কাছে টাকা আছে, টাকার বিনিময়ে আমি ছেলেকে কাছে চাই। নিজ হাতে ছেলেকে দাফন করতে চাই।
নদীতে বাড়িঘর হারিয়ে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবুল কালাম যখন প্রায় দিশেহারা তখন প্রথমে সুদান এবং সেখান থেকে লিবিয়ায় যান আরিফ। তার পাঠানো টাকায় বাবা-মা ও একমাত্র ছোট ভাই আর তিন বোনের সংসার চলতো।
নিহত আরিফের ভাই আনিস জানান, বুধবার বিকেলে লিবিয়া থেকে বেল্লাল হোসেন নামে তার ভাইয়ের সহকর্মী ফোন করে তাদের জানান, মঙ্গবার রাতে ডিউটি শেষে আরিফসহ ৪জন গাড়িতে শহরে বাজার করতে যান। তাদের অনুসরণ করছিলো আরেকটি গাড়ি। অনুসরণকারীরা তাদের হামলা করতে পারে সন্দেহ করে তারা যখন পালানোর চেষ্টা করেন তখন আইএস জঙ্গিরা তাদের উপর গুলি করে। সেসময় ২ জন মারা যান। আহত হন অন্য ২ জন।
তাদের ভাইকে দেশে আনতে ১১ লাখ টাকা লাগবে বলে বরিশালে তাদের পরিবারকে জানানো হয়েছে।
নিহতের বাবা-মাসহ সবাই সরকারের কাছে ছেলেকে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছেন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী মোঃ সাউফুজ্জামান শুক্রবার সকালে নিহতের পরিবারের সাথে দেখা করেন। তিনি বলেন, আমরা আগে থেকেই জানি, লিবিয়ার আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা ভালো। এখন এই বিষয়ে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ার পর আমরা জেলা প্রশাসন সেই অনুযায়ী সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি আরো বলেন, তার (আরিফের) পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে তার কোনো ক্ষতিপূরণ দিয়েই পূরণ করা সম্ভব না। আমরা তাদের সঙ্গে সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানালাম। তবে আমরা তার পরিবারের জন্য ২০ হাজার টাকার সামান্য আর্থিক সাহায্য দিয়েছি।
লিবিয়ায় সম্প্রতি আইএসের হামলায় যে দু’জন বাংলাদেশী নিহত হন, তাদের একজন বরিশালের আরিফ।